বিমানে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন, ৯০ সেকেন্ডে বের হন ৩৭৯ জন, কিভাবে সম্ভব হলো এটি

জাপানের টোকিওতে হানেদা বিমানবন্দরের রানওয়েতে দুটি বিমানের সংঘর্ষে পাঁচ জন মারা গেছেন। এই ঘটনায় আরো বহু হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারত। তবে ক্রুদের সতর্কতা, উপস্থিত বুদ্ধি এবং যাত্রীদের শৃঙ্খলার কারণে বেঁচে ফিরেছেন ৩৭৯ জন। মাত্র ৯০ সেকেন্ডে তারা বিমান থেকে বের হতে সক্ষম হন। এই ঘটনাকে অলৌকিক হিসেবে বর্ণনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাজ্যের ক্র্যানফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপাত্তা ও দুর্ঘটনা তদন্ত বিভাগের অধ্যাপক গ্রাহাম ব্রেইথওয়েইটের মতে, জাপানের বিমান পরিষেবাকর্মীদের অসাধারণ দক্ষতা ও কর্মতৎপরতার কারণেই এই ‘অলৌকিক ঘটনা’ ঘটা সম্ভব হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে ব্রেইথওয়েইট বলেন, আমি ভিডিও ফুটেজে যা দেখলাম, তার ভিত্তিতে বলতে পারি যে এত অল্প সময়ের মধ্যে যাত্রীবাহী বিমানটির সব যাত্রীকে জীবিত উদ্ধারের ঘটনা রীতিমতো অবিশ্বাস্য।

মঙ্গলবার রাজধানী টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিষেবা সংস্থা জাপান এয়ারলাইন্সের একটি এয়ারবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জাপানের কোস্টগার্ড বাহিনীর একটি ড্যাশ ৮ উড়োজাহাজের। এ সময় এয়ারবাসটিতে মোট ৩৭৯ জন যাত্রী ছিলেন।

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত জাপানের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় নোটো বিভাগে ত্রাণ সরবরাহ করে ফিরছিল কোস্টগার্ডের ড্যাশ ৮ উড়োজাহাজটি। হানেদা বিমানবন্দরে ল্যান্ডিংয়ের সময় রানওয়েতে অপেক্ষমান এয়ারবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সেটির। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় কোস্টগার্ড উড়োজাহাজের ৫ জন ক্রু নিহত হলেও এয়ারবাসের সব যাত্রীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই যাত্রীদের মধ্যে মাত্র ৪ জন আহত হয়েছেন।

ব্রেইথওয়েইট বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে বোঝা যায়, এই দুর্ঘটনাটি প্রতিরোধ করা অসম্ভব ছিল। তবে জাপান এয়ারলাইন্স তাদের নিরাপত্তা এবং ক্রুদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কী পরিমাণ মনযোগ দেয়, তা আমি জানি। তাদের এই অসাধারণ দক্ষ উদ্ধার তৎপরতাই আসলে এই যাত্রীদের প্রাণ বাঁচিয়েছে।

সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে ব্রেইথওয়েইট জানান, এর আগে ১৯৮৫ সালের ১২ আগস্ট জাপান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং বিমান বিধ্বস্ত হওয়ায় সেই বিমানটির মধ্যে থাকা ৫২৪ জন যাত্রীর মধ্যে ৫২০ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছিলেন। রাজধানী টোকিও থেকে ওসাকাগামী সেই উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার প্রধান কারণ ছিল সেটির পেছনের অংশের ত্রুটি এবং এই ত্রুটির জন্য দায়ী ছিল টেকনিশিয়ানরা। ওই দুর্ঘটনটাটি এখন পর্যন্ত বিমান পরিষেবার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy