
তিনি বাবাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে শুধুমাত্র তাঁর দেখাশোনা এবং একসঙ্গে সময় কাটানোর জন্য তিনি চাকরি ছেড়ে দেবেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! মঙ্গলবার সেই প্রতিশ্রুতির বদলে পিতাকে আসতে হলো ছেলের শেষকৃত্যের জন্য। গত বৃহস্পতিবার কয়েক দশকের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল দেশ। এয়ার ইন্ডিয়া ১৭১, যেন এক অভিশপ্ত নাম, যা কেড়ে নিল শতাধিক প্রাণ, ধ্বংস করে দিল হাজার হাজার স্বপ্ন। কেউ নতুন জীবন শুরু করছিলেন, কারও জন্য বাড়িতে অপেক্ষা করছিল ছোট্ট শিশুরা – কিন্তু তাদের কেউই আর আগের মতো অবস্থায় বাড়ি ফিরতে পারল না। আর ফিরতে পারলেন না সেই বিমানের ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়াল।
দেহ নয়, এল দেহাংশ: শোকস্তব্ধ বাবা পুষ্করাজ সবরওয়াল
যখন তাদের কাছে পৌঁছাল, তখন তারা প্রাণহীন, দেহ প্রায় নেই। এসেছে কেবল কিছু দেহাংশ। এদিন সেই দেহাংশের সামনে দাঁড়ালেন সুমিত সবরওয়ালের বাবা পুষ্করাজ সবরওয়াল। যে বিমান প্রাণ কেড়ে নিল তার প্রিয় সন্তানের। মঙ্গলবার আহমেদাবাদ থেকে মুম্বইয়ে শেষবারের মতো বিমানে করেই এল সুমিতের দেহাংশ। এরপর তা পৌঁছে গেল তাঁর বাড়িতে, যেখানে অপেক্ষা করছিলেন সুমিতের বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। ছেলের এমন পরিণতি দেখে তিনি হাউহাউ করে কেঁদে উঠলেন, তার কান্নায় যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল।
বাড়িতে ঘণ্টাখানেক শোকজ্ঞাপনের পর প্রয়াত বিমান চালকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চাকালা শ্মশানে। এই শোকের মুহূর্তে তার শেষযাত্রায় উপস্থিত থাকতে দেখা যায় স্থানীয় কয়েকজন বিধায়ক ও দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী নিরঞ্জন হিরানন্দানিকে।
VIDEO | Mumbai: Parents attend the funeral of Pilot Captain Sumeet Sabharwal, who lost his life in the Ahmedabad AI Plane Crash incident. pic.twitter.com/CZw1WmC3GH
— Press Trust of India (@PTI_News) June 17, 2025
ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়ালের বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা মোটেই কম ছিল না। নিজের জীবদ্দশায় তিনি মোট ৮ হাজার ২০০ ঘণ্টা বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। এমনকি, সুমিতের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার উড়ান স্কুলের অধ্যাপকরাও যেন থমকে গিয়েছিলেন, এমন একজন অভিজ্ঞ পাইলটের এমন মর্মান্তিক প্রয়াণ কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এই দুর্ঘটনা আবারও দেশের বিমান সুরক্ষা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এবং নিহতদের পরিবারে নেমে এসেছে এক গভীর ও নিদারুণ শোকের ছায়া।