রাতে বাঁকুড়ার জেলা বিজেপি কার্যালয়ে ‘পুলিশি অভিযান’ চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এবং বিজেপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের তীব্র বাদানুবাদ হয়। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ দরজা ভেঙে কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালিয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি, রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির স্বামী তুহিন মান্ডির উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজেই এই তল্লাশি চালানো হয়েছে।
বাঁকুড়া জেলা বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার গভীর রাত আনুমানিক ২টা নাগাদ হঠাৎ করেই পুলিশবাহিনী তাদের জেলা কার্যালয়ে চড়াও হয়। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশের দলবল কার্যালয়ের মূল দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে দ্রুততার সঙ্গে বিজেপি কর্মীরা কার্যালয়ের সামনে ছুটে আসেন এবং পুলিশের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা এবং শাসক দলের নির্দেশে পুলিশ তাদের কার্যালয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের প্রশ্ন, যদি তল্লাশিই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে এত রাতে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার কী প্রয়োজন ছিল?
অন্যদিকে, বাঁকুড়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির স্বামী তুহিন মান্ডির উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের সন্ধানেই এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, অভিযুক্তরা বিজেপি কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে এমন খবর পাওয়ার পরই তারা তল্লাশিতে গিয়েছিল। যদিও দরজা ভেঙে প্রবেশ এবং ভাঙচুরের অভিযোগ সম্পর্কে পুলিশ বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই জ্যোৎস্না মান্ডির স্বামী তুহিন মান্ডির উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই হামলার ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই পুলিশের এই ‘অভিযান’ বলে মনে করা হচ্ছে।
জেলা বিজেপি এই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের ওপর আঘাত’ হিসেবে দেখছে এবং এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। অন্যদিকে, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এখনও এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। বাঁকুড়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই ঘটনায় আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, এই ‘পুলিশি অভিযান’ নিয়ে আগামী দিনে আর কী কী তথ্য সামনে আসে এবং এর রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কতটা তীব্র হয়।
