
চাকরিহারা শিক্ষকদের বিকাশ ভবন ঘেরাও অভিযান ঘিরে বৃহস্পতিবার দিনভর ছিল উত্তেজনা। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান এবং তৃণমূল কাউন্সিলর সব্যসাচী দত্ত। তাঁকে দেখেই চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা ‘চোর’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, সব্যসাচীর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা।
এই পরিস্থিতিতে মেজাজ হারান তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত। বিক্ষোভকারী চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিকে তেড়ে যান তিনি। তাঁর নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশ কোনওমতে তাঁকে ভিড় ঠেলে বের করে আনার চেষ্টা করলেও উত্তেজনা কমেনি। অভিযোগ উঠেছে, তৃণমূল নেতার অনুগামীরা হেলমেট দিয়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের মারধর করেছেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে সব্যসাচী দত্ত নিজেও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “ভাই, আমার গাড়ি আমার ওয়ার্ডে আটকালে তো আর আদর করবে না।” তাঁর এই মন্তব্য আগুনে ঘি ঢালে।
হকের চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে এদিন বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। সেখানেই সব্যসাচী দত্তকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। তাদের মূল অভিযোগ, রাজ্যের একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে সব্যসাচী দত্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হেলমেট দিয়ে মারধর করেছেন। তারা প্রশ্ন তোলেন, যাদের অবৈধভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে, সব্যসাচী দত্ত নিজেও কি সেই পথেই চাকরি দিয়েছেন? এই ঘটনার পর তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা এবং মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। চাকরিহারাদের হুঁশিয়ারি, যতদিন না তাদের হকের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই আন্দোলন চলবে। তারা আরও বলেন, ঘুষ দিয়ে বা নেতা-মন্ত্রী ধরে চাকরি পাননি, যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েও কেন বারবার পরীক্ষা দিতে হবে? এই প্রশ্ন তুলেই তারা এদিন ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে বিকাশ ভবন চত্বর মুখরিত করে তোলেন। অবৈধ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি কোনোভাবেই প্রকাশ করতে দেবেন না বলেও তারা রাজ্যকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।