
বালির অবৈধ কারবারকে কেন্দ্র করে সোনামুখী থানার উত্তরবেশিয়ায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এর জেরে পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় দুই সিভিক কর্মী ও এক হোমগার্ডকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ ইতিমধ্যে ৭ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দামোদর নদের চর থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন ও পাচার চলছিল। এই কারবারে কাপালিমানা গ্রামের একাংশের বাসিন্দারা জড়িত ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে সম্প্রতি এই অবৈধ কার্যকলাপ রুখতে অভিযান চালানো হয়। বেশ কয়েকটি ট্রাক্টর জব্দ করা হয় এবং একাধিক পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়। এরই প্রতিশোধ হিসেবে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালায়।
ঘটনার দিন রাতে ৫০-৬০ জনের একটি দল উত্তরবেশিয়ার পুলিশ ক্যাম্পে চড়াও হয়। সেই সময় ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন হোমগার্ড বিমান সরকার। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এছাড়া সিভিক কর্মী রঞ্জিত চৌধুরী এবং জয়ন্তকুমার খাঁ-ও হামলার শিকার হন। খবর পেয়ে রাতেই সোনামুখী থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের তড়িঘড়ি সোনামুখী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
আহত হোমগার্ড বিমান সরকার সোনামুখী থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার ধৃতদের বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস জানিয়েছেন, “গত দুই-তিন মাস ধরে দামোদর নদের চর থেকে অবৈধভাবে বালি পাচার চলছিল। এতে কাপালিমানা গ্রামের কিছু বাসিন্দা জড়িত। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ট্রাক্টর জব্দ করেছে এবং পাচারকারীদের গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার জেরেই ক্ষোভ থেকে হামলা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ বালি পাচারের কারণে দামোদর নদের তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন বেড়েছে। এতে কৃষিজমি ও বসতি হুমকির মুখে পড়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলেও পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে অবৈধ বালি কারবারের মূল হোতাদের ধরতে পুলিশ আরও তৎপরতা বাড়িয়েছে বলে জানা গেছে।