বাবা রিকশা চালিয়ে পড়িয়েছেন মেয়েকে, চাকরি পেয়ে লন্ডনে যাওয়ার পথেই সব পুড়ে শেষ

বাবার রিকশা চালিয়ে উপার্জিত অর্থে পড়াশোনা করে লন্ডনে স্বপ্নের চাকরি পেয়েছিলেন পায়েল খটিক। প্রথমবারের মতো বিমানে চেপে সেই চাকরিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু আহমেদাবাদ থেকে বিমান উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পায়েল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আহমেদাবাদ এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনার (এআই-১৭১) বিমানে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ওঠেন গুজরাটের হিম্মতনগরের পায়েল খটিক। কিন্তু টেক-অফের কিছুক্ষণ পরেই আহমেদাবাদ বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায় ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। যাত্রী, পাইলট, বিমানকর্মী-সহ ড্রিমলাইনারে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মৃত্যু হয়েছে পায়েলেরও।

বিমানের ২৪১ জনের পাশাপাশি আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার অভিশপ্ত বিমানটি একটি মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন ডাক্তারদের হোস্টেলে ভেঙে পড়ে। জনবহুল এলাকায় ভেঙে পড়ায় প্রাণহানির সংখ্যা আরও বেড়েছে। সূত্র অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ২৭৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ইন্টার্ন ডাক্তার এবং একজন চা-বিক্রেতার ছেলে। যদিও সরকারিভাবে এখনও হতাহতের সংখ্যা জানানো হয়নি।

এদিকে, কী কারণে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান, তা খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, অন্যান্য যে সব সংস্থা তদন্ত করছে, সেটার বিকল্প হিসেবে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। একইসাথে, ভবিষ্যতে কীভাবে এমন দুর্ঘটনা রোধ করা যায়, সেই বিষয়টিও কমিটি খতিয়ে দেখবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে।

ইতিমধ্যে আহমেদাবাদের দুর্ঘটনাস্থল থেকে অভিশপ্ত এয়ার ইন্ডিয়ার ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা বিমানের শেষ ৩৩ সেকেন্ডে কী হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছেন। সেজন্য বিভিন্ন সম্ভাব্য কারণ, যেমন কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ বা অন্যান্য কোনও সমস্যা ছিল কিনা, তা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখবেন।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy