
বলিউডের ‘ভাইজান’ সালমান খান, যাকে অনেকেই আবেগপ্রবণ ও দয়ালু বলে মনে করেন, আবার কেউ কেউ রগচটা স্বভাবের বলেও জানেন – তিনি আসলে একজন পাক্কা ‘ফ্যামিলি ম্যান’। পরিবারের প্রতিটি সদস্যকেই তিনি আগলে রাখেন। সৎ মা হেলেনের সঙ্গেও তার সম্পর্ক এখন অত্যন্ত মধুর। কিন্তু এই সালমানই একসময় তার বাবা সেলিম খানের দ্বিতীয় বিয়ের খবর শুনে রীতিমতো ভেঙে পড়েছিলেন।
সালমান বড় হয়েছেন মা সালমা খান ও বাবা সেলিম খানের মধুর দাম্পত্য সম্পর্ক দেখে। তাদের জীবনে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির আভাস পর্যন্ত পাননি। সেই ছন্দপতন ঘটে যখন অভিনেত্রী হেলেন রিচার্ডসন তাদের জীবনে আসেন। হঠাৎ করেই সেলিম খান হেলেনকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন, যা সালমা খানকে গভীরভাবে আঘাত করে। বাবার জীবনে দ্বিতীয় নারীর প্রবেশকে শুরুতে ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি সালমান বা পরিবারের অন্য সদস্যরা।
১৯৮১ সালে সেলিম খান হেলেনকে বিয়ে করেন, যখন সালমা খানের সঙ্গে তার ১৭ বছরের দাম্পত্য ছিল। তাদের চার সন্তান— সালমান, সোহেল, আরবাজ ও আলবিরা। সত্তরের দশকে সেলিম-জাভেদ জুটি হিসেবে চিত্রনাট্যকার হিসেবে অত্যন্ত সফল ছিলেন। হেলেন ১৯৭০ সালে সেলিমের সংস্পর্শে আসেন এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। প্রায় ১০ বছর প্রেমের পর ১৯৮১ সালে তাদের সম্পর্ক বিয়েতে পরিণতি পায়।
বাবার দ্বিতীয় বিয়ের খবর সালমানের কানে পৌঁছাতেই তার জীবন ওলটপালট হয়ে যায়। মায়ের অত্যন্ত কাছের সন্তান হিসেবে তিনি মায়ের চোখের জল সহ্য করতে পারেননি। শুধু সালমান নন, খান পরিবারের কেউই শুরুতে সেলিমের দ্বিতীয় বিয়েতে সমর্থন জানাননি।
এক সাক্ষাৎকারে সালমান বলেছিলেন, “আমি মাম্মাস বয়। কখনও মায়ের চোখের জল সহ্য করতে পারিনি। হেলেনকে বিয়ে করে বাবা হয়ে ওঠেন আমার শত্রু।”
অন্যদিকে, হেলেন নিজেও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি জানতেন, একজন বিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করলে কী ধরনের প্রতিকূলতা আসতে পারে। হেলেন বলেছিলেন, “আমি জানতাম, সেলিমকে বিয়ে করলে কী কী অশান্তি হতে পারে। নিজেকে খুবই অপরাধী মনে হতো। তবে সেলিম বাকিদের মতো ছিলেন না। তাকে খুবই সম্মান করি। ইন্ডাস্ট্রিতে আমাকে রক্ষা করেছিলেন সেলিমই।”
তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব বদলে যায়। বিয়ের পর হেলেন দ্রুত খান পরিবারের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেন। অল্প সময়ের মধ্যেই পরিবারের সদস্যরা, বিশেষ করে সালমান, তাকে আপন করে নেন। হেলেনকে সালমান নিজের মায়ের আসনে বসিয়েছেন। সালমা খানের সঙ্গেও হেলেনের চমৎকার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্ক এখন বলিউডের অন্যতম উদাহরণ হয়ে উঠেছে, যেখানে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির মধ্যেও একটি পরিবার ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারে।