
যাদবপুর ইস্যুকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এবার সরাসরি সংঘাতের মুখোমুখি হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) বিধায়ক মদন মিত্র এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা অর্জুন সিং। সোমবার কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র বিজেপি নেতা অর্জুন সিংকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “কামারহাটিতে ঢুকতে চাইলে, ঢুকতে পারবে, কিন্তু বেরতে আর পারবে না।” এর ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা অর্জুন সিং পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, যা রাজনৈতিক মহলে তীব্র চর্চার জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে অর্জুন সিং মদন মিত্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “কামারহাটি ছেড়ে দিন। মদন মিত্রকে বলুন, কোথায় আসতে হবে। ভবানীপুরে তো ওর অরিজিনাল বাড়ি। আমি যেদিন চাইব, ওর সঙ্গে থাকা লোকজন ওকে চড় থাপ্পড় মারবে!” অর্জুনের এই মন্তব্যে স্পষ্ট যে তিনি মদন মিত্রের রাজনৈতিক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করতে প্রস্তুত। তিনি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে মদনের নিজের দলের লোকজনই তাঁর বিরুদ্ধে যেতে পারে, যা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ গতিবিধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এই তীব্র বাক্যবিনিময়ের পটভূমিতে যাদবপুরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কামারহাটি ও ব্যারাকপুরের মতো এলাকাগুলোতে দুই দলের প্রভাব নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সম্প্রতি বেলঘরিয়ায় শুটআউটের ঘটনার পরও মদন মিত্র অর্জুন সিংকে আক্রমণ করেছিলেন, এবং তার জবাবে অর্জুন তৃণমূলের বিরুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছিলেন। এই ঘটনাগুলো দুই নেতার মধ্যে ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক শত্রুতাকে আরও গভীর করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত কেবল মদন মিত্র এবং অর্জুন সিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের প্রতিফলন। কামারহাটি এবং ভবানীপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রভাব বিস্তারের লড়াই আগামী দিনে আরও তীব্র হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা এই রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তার দাবি তুলেছেন। একজন বাসিন্দা বলেন, “এই ধরনের বাক্যবিনিময় শুধু উত্তেজনাই বাড়ায়। আমরা চাই এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কথা হোক।” তবে দুই নেতার এই সংঘাত কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে সবার দৃষ্টি এখন রাজনৈতিক মঞ্চের দিকে।
এই ঘটনার পর তৃণমূল বা বিজেপি কোনও দলই আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দেয়নি। তবে সামাজিক মাধ্যমে এই দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আগামী দিনে এই লড়াই কীভাবে প্রভাব ফেলবে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে, তা সময়ই বলবে।