মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দুক নিয়ন্ত্রণ বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে পাস হয় এই বিল। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দুই দলের সদস্যদের সমর্থনে চলতি সপ্তাহে বিলটি মার্কিন কংগ্রেসের উভয়কক্ষে পাস হয়।
মার্কিন কংগ্রেসে পাস হওয়া বিলে তরুণ ক্রেতাদের কাছে অস্ত্র বিক্রির আগে তাদের অতীত ইতিহাস ভালোভাবে খতিয়ে দেখা এবং হুমকি হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অস্ত্র সরিয়ে নিতে রাজ্যগুলোকে উৎসাহিত করার কথা রয়েছে।
শনিবার (২৫ জুন) বিলটিতে স্বাক্ষর করার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন যে ‘নিহতদের স্বজনরা মার্কিন সরকার কিছু করবে বলে আশা করেছিলেন। আজ আমরা সেটি করেছি।’ প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরও বলেছেন, ‘আমি যা চাই যদিও এই বিলটি তা করে না, তবে এতে এমন কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা আমি আগে থেকেই বলে আসছি এবং যেটি মানুষের জীবন বাঁচাতে চলেছে।
সম্প্রতি বন্দুক হামলার ঘটনা বেড়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। বিশেষ করে গত মাসে নিউইয়র্কের বাফেলোর একটি সুপারমার্কেটে, টেক্সাসের উভালদে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্দুক হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে মার্কিন প্রশাসন।
বন্দুক নিয়ন্ত্রণ বিলে যেসব সংস্কারের কথা বলা হয়েছে,
১। ২১ বছরে কম বয়সী বন্দুক ক্রেতাদের ক্ষেত্রে তাদের অতীত ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হবে।
২। মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মসূচি ও স্কুলের নিরাপত্তা উন্নীত করার লক্ষ্যে এক হাজার ৫০০ কোটি ডলারের কেন্দ্রীয় তহবিল বরাদ্দ।
৩। হুমকি বলে বিবেচিত মানুষদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দূরে রাখতে ‘রেড ফ্ল্যাগ’ আইনের বাস্তবায়নের জন্য অঙ্গরাজ্যগুলোকে উদ্বুদ্ধ করতে তহবিল বরাদ্দ।
৪। অবিবাহিত অন্তরঙ্গ সঙ্গীকে নিপীড়ন করা ব্যক্তিদের কাছে বন্দুক বিক্রি আটকে দিয়ে তথাকথিত ‘বয়ফ্রেন্ড লুপহোল’ বন্ধ করা।
যদিও প্রেসিডেন্ট বাইডেন বন্দুক আইনে আরও বড় সংস্কারের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা কিংবা বন্দুক ক্রয়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়সসীমা বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে ছিলেন বাইডেন।
সম্প্রতি টেক্সাসে স্কুলে নির্বিচারে গুলি চালানো বন্দুকধারী তার বয়স ১৮ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই দুটি আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র কিনেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ বিলটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলার আরও একটি বড় কারণ রয়েছে। কয়েক দশকের মধ্যে এবারই প্রথম বন্দুক আইন সংস্কারের পক্ষে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানরা একমত হয়েছেন। সাধারণত বন্দুক আইন কঠোর করার চেষ্টায় রিপাবলিকান দলটি এতে বাধা প্রদান করতো এর আগে।
এদিকে, ন্যাশনাল রাইফেলস এসোসিয়েশন (এনআরএ) এই বিলের বিরোধীতা করছে। তাদের যুক্তি এটি হয়ত সহিংসতা রোধ করতে পারবে না।