লন্ডনগামী ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার রেশ এখনও তাজা। সেই ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহ পেরোতেই ফের বিতর্কে জড়াল এয়ার ইন্ডিয়া। এবার অভিযোগের তির লন্ডন থেকে মুম্বইগামী এআই-১৩০ বিমানে। মাঝ আকাশেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়লেন যাত্রী ও কেবিন ক্রুরা। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিমানযাত্রীদের মধ্যে।
জানা গিয়েছে, সোমবার লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে মুম্বইর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল ফ্লাইট এআই-১৩০। তবে আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই একাধিক যাত্রী ও কেবিন ক্রুরা পেটব্যথা, বমি বমি ভাব ও মাথা ঘোরা-র সমস্যায় আক্রান্ত হন।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ১১ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন, যার মধ্যে রয়েছেন ৫ জন যাত্রী ও ৬ জন বিমানকর্মী। ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এক কেবিন ক্রু এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে বিমানের ভিতরেই লুটিয়ে পড়েন।
এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, বিমানে অবতরণের পরই দুই যাত্রী ও দুই কেবিন ক্রুকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য আলাদা করে নেওয়া হয়। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর পর্যবেক্ষণে রাখা হয় এবং পরে অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট না হলেও, প্রাথমিকভাবে ফুড পয়জনিং বলেই অনুমান করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে, এবং ডিজিসিএ-কে রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে।
একইদিনে আরও এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয় দিল্লি-জম্মু-শ্রীনগরগামী এআইএক্স-২৫৬৪ বিমানে। মাঝ আকাশে পাইলট জিপিএস সিগন্যাল বিঘ্নের আশঙ্কা করায়, বিমানটি জম্মুর বদলে আবার দিল্লিতে ফিরে আসে।
সূত্রের খবর, পাইলট কোনও ঝুঁকি না নিয়ে বিমানটিকে কিছুক্ষণ আকাশে ঘোরানোর পর নিরাপদে দিল্লিতে অবতরণ করান। পরবর্তীতে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বিকল্প বিমানের ব্যবস্থা করে এয়ার ইন্ডিয়া।
প্রসঙ্গত, মাত্র এক সপ্তাহ আগে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানের দুর্ঘটনায় ২৪১ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনার পরে, দেশের অন্যতম প্রধান উড়ান সংস্থাটিকে ঘিরে নিরাপত্তা ও পরিষেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র।
ওই দুর্ঘটনায় বিমানটিতে থাকা ১৬৯ জন ভারতীয় ছাড়াও ৫৩ জন ব্রিটিশ, একজন কানাডিয়ান, সাত জন পর্তুগিজ এবং ১০ জন ক্রু সদস্য ছিলেন।
বস্তুত, টানা একের পর এক ঘটনায় ক্রমশ চাপে পড়ছে এয়ার ইন্ডিয়া। যাত্রীদের মধ্যে বাড়ছে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা। পরপর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দায় নির্ধারণই এখন সময়ের দাবি।
