আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমানো এক ভারতীয় ছাত্রের প্রতি মার্কিন বিমানবন্দরে চরম অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। নিউ জার্সির নিউআর্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে গত ৭ জুন এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, বিমানবন্দরের পুলিশকর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীরা ওই ভারতীয় ছাত্রকে হাতকড়া পরিয়ে শুধু হেনস্থাই করেননি, তাকে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়।
এই গা-শিউরে ওঠা ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম তুলে ধরেন ইন্দো-আমেরিকান সামাজিক উদ্যোক্তা কুণাল জৈন। তিনি ইনস্টাগ্রামে জানান, বিমানবন্দর থেকে এক তরুণ ভারতীয় ছাত্রকে দেশে ফেরত পাঠাতে দেখেছেন, যার হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। এই অমানবিক আচরণে ছেলেটি কান্নায় ভেঙে পড়েছিল এবং তার সঙ্গে একজন অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছিল। কুণাল জৈন তার পোস্টে লেখেন, “একজন এনআরআই (অনাবাসী ভারতীয়) হিসেবে আমি অসহায় এবং দুঃখিত বোধ করছি।”
কিন্তু কেন এমন আচরণ করা হলো ওই তরুণের সঙ্গে? জানা গেছে, ছাত্রটি আমেরিকান কর্মকর্তাদের কাছে তার সফরের সঠিক কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেনি। কুণাল জৈন আরও উল্লেখ করেন যে, এমন ঘটনা নতুন নয়। প্রায় প্রতিদিনই ৩-৪টি এমন ঘটনা দেখা যায়, যেখানে সকালে আসা অনেককে সন্ধ্যার ফ্লাইটে হাত-পা বেঁধে ফেরত পাঠানো হয়।
কুণাল জৈন তার এই পোস্টে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ট্যাগ করে ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ওই ছাত্রের তার সঙ্গেই একই বিমানে আসার কথা ছিল, কিন্তু তাকে বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি। এই ঘটনার গভীরে গিয়ে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প বেআইনি অভিবাসী বিতাড়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তিনি এই বিষয়ে সক্রিয় হয়েছেন। এর আগেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, যেখানে পায়ে শেকল পরানো অবস্থায় তাদের ফেরানোর লজ্জাজনক ভিডিও সারা বিশ্বের নজরে এসেছিল। এবার এক অনাবাসী ভারতীয়র সৌজন্যে নিউ জার্সিতে ভারতীয় ছাত্রের এই হেনস্থার ছবি সামনে এল, যা ফের একবার মার্কিন অভিবাসন নীতির কঠোরতা এবং তার মানবিক দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।