বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি! এমন সন্দেহে আবারও এক বাঙালি পরিযায়ী পরিবারকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানোর অভিযোগ উঠল। ফের সামনে এল “পুশব্যাক” বিতর্ক। কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিবার এবং অধিকার কর্মীরা। রাজ্যে ফের গর্জে উঠেছে সমালোচনার সুর।
ঘটনার সূত্রপাত দিল্লিতে। বীরভূমের পাইকর এলাকার বাসিন্দা দানিশ শেখ, পেশায় একজন পরিযায়ী শ্রমিক। দিল্লির রোহিনী কারজু মার্গ এলাকার একটি বস্তিতে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার-সহ বাস করছিলেন তিনি। অভিযোগ, গত ১৭ জানুয়ারি দিল্লি পুলিশের একটি দল পরিচয়পত্র যাচাইয়ের অজুহাতে তাঁকে এবং পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে তুলে নিয়ে যায়।
পরে জানা যায়, ২৬ জুন, দানিশ শেখ-সহ মোট ছ’জনকে, যাদের মধ্যে একজন শিশু সদস্যও ছিল, বিএসএফ-এর সহায়তায় বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়। দানিশের পরিবারের বাকি সদস্যরা এখন উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁরা ইতিমধ্যেই বীরভূম জেলা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন এবং সকলকে দেশে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছেন।
দানিশের এক আত্মীয় জানান,“আমার জামাই-মেয়ে সবাইকে ধরে নিয়ে চলে গিয়েছে। আমরা ভোটার কার্ড, আধার সব দেখিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কিছুই মানেনি। এখন শুনছি, বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা কোথায় যাব?”
এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্যমঞ্চ। সংগঠনের সম্পাদক আসিফ ফারুক জানিয়েছেন,
“বাংলা বললেই এখন সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোয় পুলিশ নিজেরাই বিচারকের ভূমিকায় কাজ করছে। এটি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। কেন্দ্রীয় সরকার অবিলম্বে দানিশ এবং তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের ফেরত আনুক—এই দাবি জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, এর আগেও এমন একাধিক ঘটনার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন,“বাংলা ভাষায় কথা বললেই কাউকে বাংলাদেশি বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা ভারতের গণতন্ত্রের অপমান।”