News

প্রবল দুর্যোগ, একে একে তলিয়ে গেলেন বাবা-মা-ঠাকুরমা, মৃত্যুপুরীতে একা বেঁচে ১১ মাসের কন্যা

অসাধারণ সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত হিমাচল এখন মৃত্যুর ছায়ায় ঢেকে গেছে। প্রবল বর্ষণ, ভূমিধস আর হড়পা বানে বিধ্বস্ত পাহাড়ি জনপদ। মান্ডি, কুলু, কাংড়া—সব জায়গায় শুধু ধ্বংসের ছবি। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পর তছনছ হয়ে গেছে জনজীবন। বাড়ি, রাস্তাঘাট, সেতু—সবই ভেসে গেছে পাহাড়ি তোড়ে। কিন্তু এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যেও চোখ ভেজানো এক অলৌকিক কাহিনি উঠে এসেছে মান্ডি থেকে।

একটি ছোট্ট শিশু—মাত্র ১১ মাসের—প্রকৃতির রোষে ভেসে গিয়েও অক্ষত। অথচ তার মা-বাবা ও ঠাকুরমা—তিনজনই জলের তোড়ে নিখোঁজ বা মৃত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মান্ডির এক গ্রামে রাত ১টা নাগাদ আচমকা প্রবল জলের ঢেউ এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় রমেশ কুমার, তাঁর স্ত্রী রাধা দেবী এবং বৃদ্ধা মা পুনম দেবীকে। কিন্তু পরদিন সকালে SDRF ও উদ্ধারকারী দল ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে জীবিত উদ্ধার করে একাকী কাঁপতে থাকা শিশুকন্যাটিকে।

পরিবারের সবকিছু হারিয়ে সে এখন সম্পূর্ণ একা। শোকগ্রস্ত কাকা জানিয়েছেন, বহু মানুষ শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইছেন। কিন্তু তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—”ও আমাদের রক্তের সম্পর্ক। আমরা ওকেই নিজেদের সন্তান করে বড় করব।”

হিমাচলে গত ২০ জুন থেকে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৭৮ জনের। তার মধ্যে মান্ডি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। শতাধিক রাস্তা বন্ধ, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ভারী বৃষ্টিপাতে এখনো বহু এলাকা জলমগ্ন।

আবহাওয়া দফতর (IMD) সতর্কতা জারি করেছে রাজ্যের ১০টি জেলায়, বিশেষত মান্ডি, কাংড়া ও সিরমৌরে ‘রেড অ্যালার্ট’ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অত্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

প্রকৃতির এই নির্মম খেলা হিমাচলের বুক থেকে কেড়ে নিচ্ছে ঘরবাড়ি, পরিবার, স্বপ্ন—আর কখনও কখনও, রেখে যাচ্ছে একার বেঁচে থাকা এক শিশু, যার জীবনের শুরুটাই মৃত্যু দেখেই।

Exit mobile version