‘স্লিপলেস নাইট’ ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া ফ্রেঞ্চ থ্রিলার-অ্যাকশন ঘরানার একটি সিনেমা। গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ভিনসেন্ট (টমার সিসলে), একজন পুলিশ অফিসার। যখন একটি মাদক চোরাচালান চুক্তির কারণে অপরাধীরা তার ছেলেকে অপহরণ করে, ছেলেকে বাঁচাতে ভিনসেন্টকে যেতে হয় একটি বিশাল এবং বিপজ্জনক নাইটক্লাবে। সেখানে এক রাতের মধ্যেই শুরু হয় প্রচণ্ড উত্তেজনা, চরম বিপদ, এবং নৈতিকতার টানাপোড়েন।
কি করবে ভিনসেণ্ট এই এক রাতে? আদৌ সে পারবে তার ছেলেকে বাঁচাতে এবং মাদক ঠিকভাবে পৌঁছে দিতে!
ফ্রেডরিক জারডিন সিনেমাটিকে এমনভাবে পরিচালনা করেছেন, যা প্রতি মুহূর্তে টানটান উত্তেজনা তৈরি করে। পুরো গল্পটি একটি নাইটক্লাবের ভেতরে ঘটলেও, এর সাসপেন্স এক মুহূর্তের জন্যও দূর্বল হয় না। চিত্রনাট্যে ভয় এবং আবেগের ভারসাম্য এত নিখুঁত যে- তা দর্শককে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে। রান্নাঘরের তুমুল অ্যাকশন দৃশ্যটি যেমন বাস্তবসম্মত, তেমনি শ্বাসরুদ্ধকর।
টমার সিসলে ভিনসেন্টের চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন। বাবার আবেগ এবং পুলিশের দায়িত্বের দ্বন্দ্ব তার অভিব্যক্তিতে অনন্য মাত্রা পেয়েছে। অপরাধী চরিত্রে জোয়ে স্টারের উপস্থিতি ভয়ানক। সহ-অভিনেতারাও তাদের চরিত্রে নিখুঁত পারফরম্যান্স দিয়েছেন, যা পুরো গল্পকে আরও শক্তিশালী করেছে।
ছবিটি মূলত অ্যাকশন থ্রিলার হলেও এটি পিতৃত্বের প্রতি দায়িত্ব, নৈতিকতার জটিলতা এবং আত্মত্যাগের গভীর গল্প বলে। পুলিশ এবং অপরাধী জগতের মধ্যকার সম্পর্ক এবং ভিনসেন্টের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের দ্বন্দ্ব সিনেমাটিকে গভীরতা দিয়েছে। সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফি এবং প্রোডাকশন ডিজাইন প্রশংসনীয়। নাইটক্লাবের অন্ধকার, আলো-ছায়ার খেলা এবং উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ খুবই বাস্তবসম্মত। সাউন্ডট্র্যাক গল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং উত্তেজনার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
‘স্লিপলেস নাইট’ নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী থ্রিলার, যা আপনাকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানটান উত্তেজনার মধ্যে রাখবে। চমৎকার পরিচালনা, দক্ষ অভিনয়, এবং বাস্তবসম্মত অ্যাকশন দৃশ্য এই ছবিটিকে মাস্ট-ওয়াচ সিনেমায় পরিণত করেছে।
আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি, এই ছবিটি গত বছর বলিউডে ‘ব্লাডি ডেডি’ নামে রিমেক করা হয়েছে। রিমেকটি পরিচালনা করেছিল আলী আব্বাস জাফর এবং অভিনয় করেছিল শহীদ কাপুর। যারা থ্রিলার এবং অ্যাকশন সিনেমা পছন্দ করেন, তাদের জন্য ছবিটি খুবই উপভোগ্য হবে নিঃসন্দেহে। না দেখে থাকলে অবশ্যই দেখে নিবেন। ছবিটির আইএমডিবি রেটিং ৬.৬/১০, রোটেন টম্যাটোজ স্কোর ৯৭% এবং মেটাক্রিটিক স্কোর ৭৫%।