
ভাড়া বৃদ্ধি-সহ একগুচ্ছ দাবি পূরণ না হওয়ায় আবারও ধর্মঘটের পথে হাঁটতে চলেছে বেসরকারি বাস মালিকদের বিভিন্ন সংগঠন। আগামী বৃহস্পতিবার (২২ মে) থেকে শনিবার (২৪ মে) পর্যন্ত তিন দিনের জন্য বাস পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছেন তাঁরা। এই ধর্মঘট ঠেকাতে সোমবার পরিবহণ দফতরের কর্তারা বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেও, কোনো সমাধান সূত্র মেলেনি। আজ, মঙ্গলবার (২১ মে) আবারও পরিবহণ দফতর এবং পুলিশকর্তাদের সঙ্গে মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসবেন। সেখানেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
কেন এই ধর্মঘট?
বাস মালিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়লেও সেই তুলনায় বাসের ভাড়া বাড়েনি। ২০১৮ সালের পর থেকে রাজ্যে আর বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এর পাশাপাশি, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ১৫ বছরের বেশি পুরোনো বাস চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে বহু বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যা মালিকদের আর্থিক সংকটের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
এছাড়াও, বিনা অপরাধে পুলিশের পক্ষ থেকে মিথ্যা মামলা দেওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন মালিক সংগঠনের কর্মকর্তারা। এই পরিস্থিতিতে পরিবহণ বাঁচাও কমিটির অন্তর্গত জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট, বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট, ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি এবং ইন্টার অ্যান্ড ইন্টার রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশন—এই পাঁচটি বেসরকারি বাস-মিনিবাস সংগঠন তিনদিনের ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মালিকদের মূল দাবিদাওয়া
সংগঠনগুলির প্রধান দাবিগুলি হলো:
- মেয়াদ উত্তীর্ণ বাসের সময়সীমা আরও দু’বছর বৃদ্ধি করতে হবে।
- যাত্রী ভাড়া বাড়াতে হবে।
- পুলিশের ‘জুলুম’ বন্ধ করতে হবে।
এর আগেও একাধিকবার ধর্মঘটের ঘোষণা করেও শেষ মুহূর্তে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তবে এবার জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, “পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে, বুধবারের মধ্যে সরকার আমাদের দাবি না মানলে ধর্মঘটে যাওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই।”
আজকের বৈঠক থেকে কী সিদ্ধান্ত আসে এবং এই ধর্মঘট এড়ানো সম্ভব হয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে আছে রাজ্যের সাধারণ মানুষ, যারা এই বাস পরিষেবার উপর নির্ভরশীল।