
পাকিস্তানের দিক থেকে আসা লাগাতার গোলার আঘাতে প্রাণ হারালেন জম্মু ও কাশ্মীরের এক সরকারি আধিকারিক। শনিবার সকালে রাজৌরি সেক্টরে ঘটা এক হামলায় নিহত হয়েছেন সেখানকার অতিরিক্ত জেলা উন্নয়ন কমিশনার (ADDC) রাজকুমার থাপা। দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনায় আরও দুই সরকারি কর্মী আহত হয়েছেন। এই ঘটনা জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত এলাকা, বিশেষ করে রাজৌরিতে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
জানা যাচ্ছে, শুক্রবার ভোর রাত থেকেই জম্মু অঞ্চলে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছে। জম্মু শহর ছাড়াও রাজৌরি এবং পুঞ্চ এলাকার সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামগুলিতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এই লাগাতার হামলায় একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন এবং বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই চলমান উত্তেজনার মধ্যেই রাজৌরি শহরে পাক গোলার আঘাত কেড়ে নেয় ADDC রাজকুমার থাপার প্রাণ। তাঁর বাসভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। নিজের এক্স পোস্টে তিনি জানান, নিহত আধিকারিক রাজকুমার থাপা অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ছিলেন। শুক্রবারই তিনি রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একটি ত্রাণ শিবিরে গিয়েছিলেন এবং মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে অনলাইনে কথাও বলেছিলেন। ওমর আবদুল্লা বলেন, “রাজৌরি থেকে ভয়াবহ খবর… আজ রাজৌরি শহরকে লক্ষ্য করে পাকিস্তান গোলাবর্ষণ করেছে… এই হামলায়… শ্রী রাজ কুমার থাপ্পা নিহত হন। এই ভয়াবহ প্রাণহানির ঘটনায় শোক ও দুঃখ প্রকাশ করার মতো কোনও ভাষা আমার নেই।”
বর্তমান পরিস্থিতিতে কাশ্মীরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন, প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন বাড়ির বাইরে না বের হন। তিনি অনুরোধ করেছেন, সকলেই যেন ঘরে অথবা নিকটবর্তী কোনও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন এবং কোনও ধরনের গুজবে কান না দেন। সকলকে তথ্য যাচাই করে খবর ছড়ানোর এবং একজোট হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনী জম্মুর অদূরে অবস্থিত পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সামরিক পোস্ট এবং জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে। এই ঘাঁটিগুলি থেকেই ভারতীয় ভূখণ্ডে টিউব ড্রোন পাঠানো হত বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, পাকিস্তান বিনা প্ররোচনায় ভারতীয় জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে লাগাতার হামলা চালিয়ে আসছে। এর আগে পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সীমান্তে পাক ড্রোন হামলায় আরও তিন জন নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
সরকারি আধিকারিকের মৃত্যুর ঘটনা প্রমাণ করে যে, পাকিস্তানের হামলা সাধারণ নাগরিক এবং সরকারি কর্মীদের জন্যও কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। সীমান্ত পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত রয়েছে এবং প্রশাসন ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর রয়েছে।