
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং পরবর্তী ভারত-পাক সংঘাত নিয়ে সোমবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রিকে একের পর এক তীক্ষ্ণ প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের নেতৃত্বে আয়োজিত এই বৈঠকে শাসক ও বিরোধী উভয় দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অভিষেকের প্রশ্ন ঘিরে কেন্দ্র-রাজ্য তর্জা আবারও তুঙ্গে উঠেছে।
পহেলগাঁও জঙ্গি হানার পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেস সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় অবস্থানকে পূর্ণ সমর্থন জানালেও, জঙ্গিদের বিষয়ে তথ্য না দেওয়ায় কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ঘাসফুল শিবির। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রিকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, “পাকিস্তানের জঙ্গিরা কীভাবে দেশে ঢুকল? পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানো চার জঙ্গি কি নিকেশ হয়েছে? যদি না হয় তবে কোথায় লুকিয়ে আছে তারা? পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছে ওই চার জঙ্গি? সরকারের কাছে কোনও তথ্য আছে কি?” যদিও তৃণমূল সাংসদের সব প্রশ্নের উত্তর বিদেশসচিব দেননি বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ ও পরবর্তী সংঘাত নিয়ে বিশ্ব দরবারে ভারতের অবস্থান তুলে ধরতে কেন্দ্রের বিশেষ প্রতিনিধি দল গঠনের বিষয়েও বিতর্ক দানা বেঁধেছে। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, এই দলে তৃণমূলের সদস্য হিসেবে থাকছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠান। কিন্তু পরে জানা যায়, এই দল থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তাঁকে নাকি এই ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। তিনি এও জানান, যদি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই বিষয়ে জানানো হয়, তবে তিনি অবশ্যই বিষয়টি বিবেচনা করবেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাক সংঘাতের মধ্যেও কেন্দ্র-রাজ্য তর্জা আবারও মাথাচাড়া দিয়েছে বলে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে।
বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতি নিয়ে আগ বাড়িয়ে কৃতিত্ব নেওয়ার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতিতে আমেরিকার কোনো হাত ছিল না। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সংঘর্ষ বিরতি হয়েছে এবং এতে আমেরিকার কোনো ভূমিকা ছিল না।
সব মিলিয়ে, পহেলগাঁও হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের নিরাপত্তা, গোয়েন্দা তথ্য এবং কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।