নওশাদ সিদ্দিকির মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক, বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচে বাধার অভিযোগ

ভাঙড়ের আইএসএফ (ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি আজ সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করেন। সাড়ে ৪টায় নবান্নে পৌঁছান নওশাদ এবং সাড়ে ৫টায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। প্রায় ২৫ মিনিট ধরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। এই বৈঠকে নওশাদ বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচ করতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ধরেন। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী নওশাদকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।

নওশাদের অভিযোগ
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে নওশাদ বলেন, “আড়াই বছর ধরে ভাঙড় পঞ্চায়েত সমিতি-১ এবং ভাঙড় পঞ্চায়েত সমিতি-২ আমার কাজে শুধু সময়ক্ষেপণ করেছে। জেলা থেকে একটি অর্ডার এসেছে, যেখানে এডিএম (ডেভেলপমেন্ট)-এর সই রয়েছে। তারা আমার কাজ আবার পঞ্চায়েত সমিতির হাতে ফেরত দিয়েছে, যে পঞ্চায়েত সমিতি ইতিমধ্যেই আড়াই বছর সময় নষ্ট করেছে। আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা বা জিজ্ঞাসাবাদ না করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমার কাজের গুণগত মান খারাপ হয়েছে, কারণ নেমপ্লেট আসেনি। এটি আমার বিধায়ক তহবিলের কাজ, এবং আমি সর্বোচ্চ স্তরে এটা নিয়ে এসেছি। এরপরেও যদি আমার কাজ ঠিকঠাক না হয়, তাহলে আমি বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে এসে ৩ কোটি টাকা খরচ করব। আমার সেই ক্ষমতা আছে। আমি কার কে নিয়ন্ত্রণ করছে, সেই বিতর্কে যেতে চাই না। আমার শুধু কাজ চাই।”

তৃণমূলে যোগদান নিয়ে প্রশ্নের জবাব
সাংবাদিকদের তরফে নওশাদকে তৃণমূলে যোগদান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কবে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি? আমার নিজের একটি দল আছে, এবং আমি সেই দলের চেয়ারম্যান। ৪২ দিন জেল খেটেছি এবং ১৩টি মামলা মাথায় নিয়ে ঘুরছি।”

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী মন্তব্য করেন, “এসব বিষয়ে আলোচনার খুব কম সুযোগ থাকে। এটি খুবই চিন্তার বিষয় যে, বিধায়ক তহবিলের কাজ এবং সেই কাজের টাকা খরচের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ২৫ মিনিট কথা বলতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কাজ কি এতই কমে গেছে যে, তিনি একজন বিধায়কের তহবিলের কাজ নিয়ে আলোচনা করছেন? সাধারণত মুখ্যমন্ত্রী কারও সঙ্গে কথা বলার সময় পান না, এমনকী প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেও। কিন্তু হঠাৎ করে আজ তিনি নওশাদকে ডেকে নিলেন এবং ২৫ মিনিট কথা বললেন। এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে তৃণমূলের শাসনকালে।”

আশ্বাসের প্রত্যাশা
নওশাদ সিদ্দিকি আশা প্রকাশ করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তাঁর সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে। তিনি বলেছেন, “আমি আমার সমস্যাগুলো উত্থাপন করেছি এবং মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।”

এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। আইএসএফ বিধায়কের এই অভিযোগ এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy