‘দ্বিতীয় বারাণসী’ হতো এই গ্রাম, কেন্দ্রের স্বীকৃতি পাওয়া বাংলার এই গ্রামের ইতিহাস জানেন?

অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি, নাটোরের রানি ভবানী নিজের ছোট্ট মেয়েকে সঙ্গে করে ভাগীরথীর তীরে অবস্থিত বড়নগরে এসে আশ্রয় নেন। এই প্রান্তিক গ্রামকে তিনি ‘দ্বিতীয় বারাণসী’ বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। একের পর এক মন্দির নির্মাণের মাধ্যমে তিনি এই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে চেয়েছিলেন। টেরাকোটা চারবাংলা শিব মন্দির, গঙ্গেশ্বর মন্দির, ভবানীশ্বর মন্দির—এগুলি ছিল তার স্বপ্নের সাক্ষী।

কিন্তু কেন রানি ভবানী বড়নগরকে বেছে নিলেন? ইতিহাসবিদদের মতে, তিনি হয়তো নিজের বাল্যবিধবা মেয়েকে পুজো-অর্চনার মধ্যে ব্যস্ত রাখতে এই স্বপ্ন দেখেছিলেন। আবার, অনেকে বিশ্বাস করেন, তিনি বড়নগরকে তার রাজ্যের একটি ধর্মীয় কেন্দ্রে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।

একটি অশান্ত প্রেমের গল্প

কিন্তু রানির এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই একটি অঘটন ঘটে। রানির মেয়ে ছিল অপূর্ব সুন্দরী। তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পড়েছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা। এই ভয়ে রানি ভবানী মেয়েকে নিয়ে কাশী চলে যান। বড়নগরের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

একটি হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন

রানি ভবানীর স্বপ্ন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তবে, তার নির্মিত মন্দিরগুলি আজও বড়নগরের ঐতিহ্য বহন করে চলে। এই মন্দিরগুলির সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছেন।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy