
রাজাদের আরাধ্য দেবতা মদনমোহনের পায়ে আবির দিয়ে কোচবিহারে শুরু হয়েছে দোল উৎসব। শুক্রবার সকাল থেকেই মন্দির চত্বরে ভক্তদের ভিড় জমতে থাকে। প্রথা মেনে কোচবিহারের বাসিন্দারা প্রথমে মদনমোহনের পায়ে আবির দেন, তারপর নিজেরা দোল উৎসবে মেতে ওঠেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দোল উৎসব উপলক্ষে ভক্তদের সুবিধার্থে মদনমোহনকে মূল মন্দিরের বাইরে নিয়ে আসা হয়।
কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্টের সভাপতি তথা জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা জানান, প্রথা মেনে এদিন কোচবিহারের সমস্ত মন্দিরে দোল উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাজাদের আরাধ্য দেবতা মদনমোহনের দোল উৎসব ঘিরে গোটা জেলা মেতে ওঠে। দোল উৎসবের আগের রাত বৃহস্পতিবার কোচবিহার রাসমেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বহ্নি উৎসব। সেদিন শোভাযাত্রা সহকারে ডাঙরাই, রাজমাতা ও মদনমোহন মন্দিরের তিন মদনমোহন রাসমেলার মাঠে আসেন। সেখানে দুয়ারবক্সী তিন মদনমোহনের পায়ে আবির দেওয়ার পর ভক্তরা আবির দেন। তারপর বুড়িঘর পোড়ানো হয়। শেষে মদনমোহনকে নিজ মন্দিরে নিয়ে আসা হয়।
শুক্রবার সকাল থেকেই রাজ আমলের এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় জমে। কোচবিহারের বাসিন্দাদের পাশাপাশি কলকাতার বহু বাসিন্দাও এদিন হাজির হন মদনমোহন মন্দিরে। কলকাতার বাসিন্দা ভাস্বতী ভট্টাচার্য বলেন, “অনেকদিন ধরেই আশা ছিল কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে আসব। এবার ভগবান চেয়েছেন, তাই সেই আশা পূরণ হল।”
এদিন মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনিন্দিতা রায় সরস্বতী। তাঁর কথায়, “আগে যখন কোচবিহারে ছিলাম, তখন প্রায়শই মদনমোহন মন্দিরে আসতাম। এবার কলকাতা থেকে শুধুমাত্র দোল উৎসবের জন্য মদনমোহন মন্দিরে এসেছি। এখানকার দোল খুব ভালো লাগে।”
দোল উৎসব উপলক্ষে মন্দির চত্বর রঙিন আবিরে সেজে ওঠে। ভক্তরা আবির ও গুলাল নিয়ে একে অপরকে রাঙিয়ে দেন। মন্দিরে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। দোলের আনন্দে মেতে ওঠেন সব বয়সের মানুষ।
কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে দোল উৎসব শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানই নয়, এটি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন। এই উৎসব কোচবিহারের মানুষের ঐক্য ও সম্প্রীতির প্রতীক।