
২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। ফলস্বরূপ, ২৬ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান নির্দেশনা:
যোগ্য প্রার্থীরা তাঁদের বর্তমান বিভাগেই কাজ করবেন।
নতুনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া (Fresh Selection Process) তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
বিশেষভাবে সক্ষম সোমা দাসের চাকরি বহাল থাকবে।
অবৈধভাবে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ফেরত দিতে হবে।
চাকরি হারানো প্রার্থীরা নতুন পরীক্ষায় বসতে পারবেন।
টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভ
রায়ের আগে থেকেই ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য এগোচ্ছেন। দুপুর ১টার মধ্যে তাঁরা শিক্ষাদফতরের সামনে জমায়েত হবেন।
রায়ের সম্ভাব্য দিক
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে তিনটি সম্ভাবনা ছিল:
পুরো নিয়োগ বাতিল হতে পারে।
যোগ্যদের চাকরি থাকবে, অযোগ্যদের চাকরি বাতিল হবে।
যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণের জন্য নতুন নিয়ম নির্ধারণ করা হতে পারে।
আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এসএসসি স্বীকার করেছে যে প্রায় ১০ হাজার বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।”
মামলার পটভূমি
২০১৬ সালে এসএসসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ ওঠে।
কলকাতা হাইকোর্ট নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করে এবং বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের ১২% সুদসহ বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
বেশ কয়েকজন প্রার্থী সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি পেয়েছেন, এমন অভিযোগ ওঠে।
মামলাটি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়, যেখানে ওএমআর শিট হারিয়ে যাওয়ায় আসল তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে ওঠে।
রাজ্য সরকার যুক্তি দিয়েছিল, একসঙ্গে এত শিক্ষকের চাকরি বাতিল হলে শিক্ষাব্যবস্থায় সংকট দেখা দেবে।
প্রক্রিয়াগত জটিলতা
এসএসসির তালিকা অনুযায়ী ৫৩০৩ জন প্রার্থী র্যাঙ্ক জাম্প ও মেয়াদোত্তীর্ণ প্যানেল থেকে চাকরি পেয়েছেন।
ডিজিটাল ওএমআর শিটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কর্মরত শিক্ষকরা ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণ করতে গেলেও জটিলতা রয়ে যাচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়
বৃহস্পতিবার সকাল ১০:৩০ টায় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করলেন।
২৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বাতিল।
নতুনভাবে নিয়োগ হবে।
অবৈধভাবে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের বেতন ফেরত দিতে হবে।
এখনও প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে—যোগ্যদের চাকরি থাকবে, নাকি পুরো প্যানেল বাতিল হবে? এই রায়ের ফলে ২৫,৫৭৩ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে।