“দিঘা থেকে আসছে না…”-জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ নিয়ে বিস্ফোরক দাবি শুভেন্দু অধিকারীর

দিঘার নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দির ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক যেন থামতেই চাইছে না। এবার এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে মন্দিরের ‘প্রসাদ’। শুক্রবার এক বিস্ফোরক সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন যে, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের নামে যে ‘প্রসাদ’ বিতরণ করা হচ্ছে, তা আসলে ‘হিন্দুদের আস্থায় আঘাত’ এবং ‘চরম মিথ্যাচার’। তাঁর সরাসরি অভিযোগের তীর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে।

শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘প্রসাদ নাম দিয়ে হিন্দুদের আস্থায় আঘাত করা হচ্ছে’। তিনি অভিযোগ করেন যে, “প্রসাদের নামে স্থানীয় মিষ্টি দোকান থেকে গজা, পেঁড়া নিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে। দিঘা থেকে আসছে না।” এই ‘ভুয়ো প্রসাদ’ বিতরণে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেছেন, “এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসাদ।” রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “পচে না গেলে নেবেন, তবে প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করবেন না।” তিনি আরও দাবি করেন, “আমরা পর্দাফাঁস করলাম, হিন্দুদের আস্থায় আঘাত, চরম মিথ্যাচার।”

ঠিক কী বলেছেন শুভেন্দু?

বিরোধী দলনেতা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করে দেন, “জগন্নাথ মহাপ্রভুকে নিয়ে নানা রঙ্গ রাজ্যে। আবার তিনি পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের আস্থায় আঘাত করার জন্য একটি প্যাকেট তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। প্যাকেটটির দাম ২০ টাকা। ১টা গজা, ১টা পেঁড়া। এতে আপত্তি নেই। ২০ টাকা বরাদ্দতেও আপত্তি নেই…লোকাল মিষ্টি দোকানে হচ্ছে। দিঘা থেকে আসছে না। দুয়ারে রেশনের মাধ্যমে দিঘার প্রসাদ বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, “এটায় নাম দেওয়া হয়েছে। কত বড় আস্থায় আঘাত। এটা মমতা ব্যানার্জির গজা, পেঁড়া হিসেবে নেবেন, প্রসাদ হিসেবে নেবেন না, যদি প্রকৃত হিন্দু হন…।”

প্রেক্ষাপট ও পূর্ববর্তী বিতর্ক:

উল্লেখ্য, দিঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়ে প্রথম থেকেই রাজ্য রাজনীতি সরগরম। এর আগে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন যে, দিঘার জগন্নাথ ধামে বিগ্রহ নির্মাণের জন্য ওড়িশা থেকে নিমকাঠ চুরি করা হয়েছে। সেই সময় এই অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আমার এত খারাপ অবস্থাও হয়নি যে নিমকাঠ চুরি করতে হবে।”

তবে, এবার ‘প্রসাদ’ বিতর্ক নতুন মাত্রা যোগ করল। শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগ তৃণমূল এবং রাজ্য সরকারের জন্য নতুন অস্বস্তি তৈরি করেছে। হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায়, এই বিতর্ক আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্য বিজেপি এই ইস্যুটিকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে আরও কোণঠাসা করার চেষ্টা করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy