ইউক্রেনের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত স্থাপনা লক্ষ্য করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। শুক্রবার ভোরের দিকে পরিচালিত এই হামলার শব্দ শোনা গেছে রাজধানী কিয়েভ থেকে কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী শহর ওদেসা পর্যন্ত।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্দ্রি সিবিহা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। শুক্রবার সকালে পোস্ট করা সেই বার্তাটিতে তিনি বলেন, “রাশিয়া আমাদেরকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। আমাদেরকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে। আমি সরকারের কাছে জরুরিভিত্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও স্থাপনাগুলোতে নাসামস, হক এবং আইরিস-টি ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা সিস্টেম বসানোর আহ্বান জানাচ্ছি।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরু থেকেই ইউক্রেনের বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও সরবরাহ সংক্রান্ত স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা করছে রুশ বাহিনী। এর ফলে ২০২৪ সালের বছরজুড়ে বিদ্যুৎ সংকটে ব্যাপকমাত্রায় ভুগতে হয়েছে ইউক্রেনের জনগণকে।
ইউক্রেনের বিদ্যুৎ পরিষেবা বিভাগের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শুক্রবার ইউক্রেনের বিভিন্ন বিদ্যুৎ সাবস্টেশনগুলোকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া এবং তারা আশঙ্কা করছেন, অদূর ভবিষ্যতে ইউক্রেনের জ্বালানি গ্যাস সংক্রান্ত স্থাপনাগুলোতেও হামলা চালাতে পারে রুশ সেনারা।
শুক্রবারে হামলা হয়েছে ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় বড় শহর লভিভ এবং তার আশপাশের এলাকাগুলোতে। হামলার পর থেকে লভিভের প্রায় পুরো এলাকা এবং এর আশপাশের অঞ্চলগুলো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ইউক্রেনের বিদ্যুৎ পরিষেবা কোম্পানি ইয়াসনো জানিয়েছে, লভিভ এবং তার আশপাশের অন্তত ৩৫ লাখ মানুষ শুক্রবার সকাল থেকে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন। তবে হামলার পর এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে রুশ বাহিনীর মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। এক মুখপাত্র বৈশ্বিক এই বার্তাসংস্থাকে বলেন, “আমরা ২০২২ সালে যুদ্ধের শুরুতেই বলেছিলাম যে বেসামরিক কোনো স্থাপনায় আমরা হামলা চালাব না। আমরা সেই প্রতিশ্রুতি মেনে চলছি এবং এখন পর্যন্ত কোনো বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষবস্তু করিনি। তবে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থার ব্যাপারটি ভিন্ন; ইউক্রেনের বিদ্যুৎ পরিষেবা ইন্ডাস্ট্রিকে আমরা সামরিক স্থাপনার ক্যাটাগরিভুক্ত করেছি।”
সূত্র : রয়টার্স