
নয় নয় করে তিন মাস পেরিয়ে গেল। জনপ্রিয়তা ধরে রেখেই এগিয়ে চলেছে ‘ডান্স বাংলা ডান্স’। এবার সঞ্চালকের ভূমিকা ছেড়ে বিচারকের আসনে বসেছেন অঙ্কুশ হাজরা। স্বভাবতই তাঁর এই নতুন জার্নিটা বেশ ভিন্ন। এতদিন ধরে সঞ্চালনাতেই নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন এই অভিনেতা। তাঁর মজার কাণ্ডকারখানায় হেসেছেন দর্শক। কখনও মৌনি রায়ের সঙ্গে খুনসুটি, আবার কখনও কোনো প্রতিযোগীর প্রতি তাঁর ভালোলাগা প্রকাশ, এমনকি প্রেম নিবেদনও করেছেন তিনি।
তবে, সেসবই ছিল ওই দেড় ঘণ্টার জন্য সীমাবদ্ধ। কিন্তু এবার অঙ্কুশ অনেক বেশি সিরিয়াস। কারণ তাঁকে এখন পালন করতে হচ্ছে এক গুরু দায়িত্ব। যদিও বিচারকের আসনে বসেও তিনি একেবারে সঞ্চালনা থেকে দূরে নন। একঝাঁক ক্ষুদে প্রতিযোগীকে তিনি সঞ্চালনা শেখাচ্ছেন। আর তাদের সঙ্গেই জোরদার টক্কর চলছে মহাগুরুর দলের দুই সঞ্চালক ভোম্বল ও হাম্পটির। এভাবেই হাসি-মজার মধ্যে দিয়ে চলছে ‘ডান্স বাংলা ডান্স’।
‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর শুটিংয়ে হাজির হয়েছিল ইটিভি ভারত। সেখানেই অঙ্কুশের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিচারকের কাজটি তাঁর কাছে কতটা কঠিন মনে হচ্ছে? উত্তরে অঙ্কুশ জানান, “ডান্স বাংলা ডান্সের বিচারক হওয়াটা ভীষণ কঠিন। এমন সব প্রতিযোগী আসে যে তাদের মধ্যে কাকে রেখে কাকে এগিয়ে দেব, তা নিয়ে রীতিমতো বিপদে পড়ে যেতে হয়। প্রতিযোগিতা গ্র্যান্ড ফিনালের দিকে যত এগোয়, কাজটা তত কঠিন হতে থাকে। যারা আগে হয়তো কিছুটা দুর্বল ছিল, তারাও ফিনালেতে এসে দারুণ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আবার যারা প্রথম থেকেই শক্তিশালী ছিল, তারা আরও দুর্দান্ত পারফর্ম করে ফিনালেতে। ফলে বিচার করাটা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।”
অঙ্কুশ থামেননি, আরও বলেন, “যেদিন এলিমিনেশন হয়, সেটা সেদিনকার পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে করা হয়। হয়তো একজন প্রতিযোগী অন্য অনেকের চেয়ে ভালো নাচে, বা আগে সবসময় সবার থেকে ভালো নেচে এসেছে। কিন্তু সেদিন যদি সে অন্যদের তুলনায় খারাপ পারফর্ম করে, তবে তাকে এলিমিনেট করতে হয়।”
এরপর তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে কি সঞ্চালনা সহজ? অঙ্কুশের অকপট উত্তর, “একেবারেই না, বরং আরও কঠিন। একজন সঞ্চালকের উপর একটা অনুষ্ঠানের সামগ্রিক রূপ কেমন হবে, সেটা সিরিয়াস হবে না মজাদার – এই বিরাট দায়িত্ব থাকে। একটা পর্বে নাচের অংশ কতটুকু থাকে? প্রত্যেকটা নাচ যদি পাঁচ মিনিট করেও ধরি, তাহলে মোটে পঁচিশ মিনিট। বাকি সময়টা কী হবে? সেই সময়টাকে ধরে রাখার দায়িত্ব থাকে সঞ্চালকের কাঁধে। দর্শক যাতে ওই সময়ে অন্য চ্যানেলে চলে না যায়, সেটাও একজন সঞ্চালকেরই দেখার দায়িত্ব।”
তাঁর কথায়, “কৌতুক বা মজা দিয়ে দর্শককে ধরে রাখতে হয়। আমরা প্রায়ই কনটেন্ট, টিআরপি এসব ভেবে কথা বলি। স্ক্রিপ্টে অনেক কিছুই লেখা থাকে। তবে বাচ্চাদের কোনও স্ক্রিপ্ট দেওয়া হয় না। ওরা নিজেদের মতো যা ইচ্ছে করছে, আর সেটাই দর্শকদের খুব ভালো লাগছে। একজন সঞ্চালককে প্রত্যেকটি পর্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন করে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয়। বাচ্চাদের কোনও টেনশন নেই, ওরা নিজেদের মতো করে ছক্কা হাঁকাচ্ছে।”