বলিউড দীর্ঘ দিন ধরেই শাহরুখ, সলমন আর আমির—এই তিনজনকে ‘তিন খান’ হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে। তবে এবার এই পরিচিত ধারণাতেই আপত্তি তুললেন স্বয়ং আমির খান। সম্প্রতি রাজ শামানির এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় কেন তাঁকে তিন খানের একজন বলা হয়, তখনই তিনি স্পষ্ট করে দিলেন যে এই ধরণের তকমা তাকে আহত করে। আমিরের মতে, অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগণ এবং হৃতিক রোশনেরও তাদের মতো সমান কৃতিত্ব পাওয়া উচিত।
“আমার খারাপ লাগে, যখন শুধু আমাদের (তিন খান) নাম নেওয়া হয়,” খোলামেলা স্বীকারোক্তি আমিরের। তিনি বলেন, “শাহরুখ, সলমন, আমার নাম নেওয়া ভুল নয়, ভালোই লাগে। কিন্তু অজয়, অক্ষয়, হৃতিক—ওরাও তো একই সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন, তাঁরাও সফল হয়েছেন, তাদের নাম আলোচনা থেকে বাদ পড়ে দেখে আমার কষ্ট হয়।”
পুরো প্রজন্মকেই সম্মান জানানোর আহ্বান
আটের দশকের শেষ দিকের পুরো প্রজন্মকেই সম্মান দেওয়া উচিত বলে জানান আমির। তার কথায়, “শুধু আমরা তিন খান নয়। আমাদের প্রজন্মে আরও অনেকে আছেন, যারা ৩০-৩৫ বছর ধরে কাজ করছেন। এটা কোনো সাধারণ ব্যাপার নয়। প্রত্যেকেই বড় হিট দিয়েছেন, প্রত্যেকেই সফল হয়েছেন। আমি চাই, এই ভুল ধারণাটা শুধরানো হোক।”
তবে কেন শুধুই ‘তিন খান’-এর নাম বারবার উঠে আসে? এ প্রশ্নের জবাবে আমির বলেন, সম্ভবত তাদের ছবিগুলোর বক্স অফিস সাফল্যই এর কারণ। তাদের ছবিগুলো রেকর্ড ভেঙেছিল, ব্যবসা করেছিল অনেক বেশি।
খান এবং অন্যান্যদের বলিউডে আত্মপ্রকাশ:
প্রসঙ্গত, বলিউডে আমির খান পা রাখেন ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবির মাধ্যমে (১৯৮৮)। সলমন খানের ক্ষেত্রে তা ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ (১৯৮৯) এবং শাহরুখ খান ‘দিওয়ানা’ ছবির মাধ্যমে (১৯৯২) বলিউডে আসেন। তাদের অল্প সময় আগে অক্ষয় কুমার ‘সওগন্ধ’ (১৯৯১) এবং অজয় দেবগণ ‘ফুল অউর কাঁটে’ (১৯৯১) ছবির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন। এদের ঢের পরে অবশ্য বড়পর্দায় পা রাখেন হৃতিক রোশন ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ (২০০০) ছবির মাধ্যমে।
আমিরের এই বক্তব্য শুধু আত্মসমালোচনাই নয়, বরং বলিউডের একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রচলনকে চ্যালেঞ্জ জানানো। ‘তিন খান’ নয়, পুরো একটি প্রজন্মকেই বাহবা দেওয়া উচিত—এটাই আমিরের বার্তা। আর এই সততার জন্যই হয়তো এত দশক ধরে তিনি বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ হিসেবে পরিচিত।
