প্রতি বছর জুলাই মাসের প্রথম দিনটি গোটা দেশজুড়ে পালিত হয় ‘ডক্টরস ডে’ বা চিকিৎসক দিবস হিসেবে। এই দিনটি শুধুমাত্র চিকিৎসকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি উপলক্ষই নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ও কিংবদন্তী চিকিৎসক ড. বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মবার্ষিকী। তাঁর কর্মময় জীবন ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই দিনটি বিশেষভাবে স্মরণীয় করে রাখা হয়। এই বছর ১ জুলাই, অর্থাৎ মঙ্গলবার, রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর এই উপলক্ষে অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করেছে, যা সরকারি কার্যালয়গুলির স্বাভাবিক কার্যক্রমে কিছু পরিবর্তন আনবে।
নবান্ন থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, ১ জুলাই রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সমস্ত দফতর দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকবে এবং তারপর ছুটি হয়ে যাবে। এর অর্থ, ওইদিন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য দুপুর ২টোর পর থেকে অর্ধদিবস ছুটি কার্যকর হবে। এই ঘোষণা সরকারি কর্মীদের মধ্যে স্বস্তির বার্তা নিয়ে এলেও, কিছু গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, কলকাতার রেজিস্ট্রার অব অ্যাসিওরেন্সেস এবং কালেক্টর অব স্ট্যাম্প রেভিনিউয়ের দফতরগুলি যথারীতি খোলা থাকবে এবং তাদের কার্যকলাপ স্বাভাবিকভাবে চলবে। এই দুটি দফতর জনজীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, তাই তাদের কার্যক্রম সচল রাখাটা অপরিহার্য। এই ব্যতিক্রম ছাড়া, রাজ্য সরকারের বাকি সমস্ত অফিসেই অর্ধদিবস ছুটি কার্যকর হবে।
ড. বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান শুধু চিকিৎসক হিসেবেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তিনি পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের আধুনিক গঠনে এক অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা এবং জনসেবার মানসিকতা তাঁকে এক কিংবদন্তী ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। এটি এক উল্লেখযোগ্য কাকতালীয় ঘটনা যে, ড. রায় তাঁর জন্মদিনেই প্রয়াত হয়েছিলেন। তবুও, তাঁর কর্মজীবনের বিশাল কৃতিত্ব এবং দেশ ও সমাজের প্রতি তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানকে সম্মান জানাতে, এই দিনটিকে তাঁর জন্মদিন হিসেবেই বৃহত্তর পরিসরে পালন করা হয়।
প্রতি বছর এই দিনে নবান্ন সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাঁকে স্মরণ করা হয়। এবছরও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। ডক্টরস ডে-র এই অর্ধদিবস ছুটি একদিকে যেমন ড. বিধানচন্দ্র রায়ের প্রতি রাজ্য সরকারের শ্রদ্ধা নিবেদনের একটি প্রতীক, তেমনই অন্যদিকে সরকারি কর্মীদের জন্য একটি ছোট বিরতির সুযোগও করে দেবে, যা ব্যস্ত সপ্তাহের মাঝে কিছুটা স্বস্তি দেবে।
