ট্রেন টিকিট কনফার্মের জন্য আর ৪ ঘণ্টার অপেক্ষা নয়, জেনেনিন রেলের নতুন নিয়ম?

দীর্ঘ দূরত্বের সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভারতীয় রেলকে দেশের মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কোটি কোটি মানুষের দৈনিক যাতায়াতের অন্যতম ভরসা এই রেল ব্যবস্থা। এবার যাত্রীদের সুবিধার্থে ভারতীয় রেল এক বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে। এতদিন ট্রেন ছাড়ার মাত্র চার ঘণ্টা আগে নিশ্চিত আসন (Confirm Seat) সহ চার্ট প্রকাশ করা হত, যা অপেক্ষমান তালিকার যাত্রীদের মধ্যে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি করত। তবে নতুন খবর অনুযায়ী, ভারতীয় রেল একটি নতুন সিস্টেমে কাজ করছে যার অধীনে কনফার্ম আসন সহ চার্ট ২৪ ঘণ্টা আগেই প্রকাশ করা হবে।

রেল যাত্রীদের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হলো টিকিট নিশ্চিতকরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা। অনেক সময় টিকিট বুক করার পরও তা নিশ্চিত হয় না এবং অপেক্ষমান তালিকা (Waiting List) দীর্ঘ হতে থাকে। টিকিট নিশ্চিত হবে কিনা, এই দুশ্চিন্তা বিশেষ করে দীর্ঘ দূরত্বের যাত্রায় চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে রেলওয়ে একটি নতুন সিস্টেমে কাজ শুরু করেছে। এর মাধ্যমে যাত্রীরা এখন ট্রেন ছাড়ার ২৪ ঘণ্টা আগেই তাঁদের আসন নিশ্চিতকরণের তথ্য জানতে পারবেন। এটি নিঃসন্দেহে যাত্রীদের জন্য এক বিশাল স্বস্তির খবর।

সূত্রের খবর, রেলওয়ে এই নতুন ব্যবস্থার পরীক্ষামূলক ব্যবহারও শুরু করে দিয়েছে। গত ৬ জুন থেকে রাজস্থানের বিকানের বিভাগে এই ব্যবস্থাটি পাইলটভাবে চালু করা হয়েছে। বর্তমানে এটি একটি নির্দিষ্ট ট্রেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, প্রাথমিক ফলাফল অত্যন্ত ইতিবাচক। রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পরীক্ষা এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছাড়াই সফলভাবে চলছে এবং যাত্রীরা এতে স্বস্তি পেয়েছেন। আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে এর কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

রেলওয়ের এই পদ্ধতি দেশের কোটি কোটি যাত্রীর জন্য একটি বড় স্বস্তি বয়ে আনবে। এখন যখন চার্ট ৪ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৪ ঘণ্টা আগে প্রস্তুত করা হবে, তখন অপেক্ষমান তালিকার যাত্রীদের ট্রেন ছাড়ার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। তাঁরা অনেক আগেই তাঁদের টিকিট নিশ্চিতকরণ সম্পর্কে জানতে পারবেন। এর ফলে যদি তাঁদের টিকিট নিশ্চিত না হয়, তাহলে তাঁরা সময় নিয়ে পরিবহনের অন্যান্য উপায় ব্যবহারের কথা ভাবতে পারবেন, যা তাঁদের শেষ মুহূর্তের হয়রানি থেকে মুক্তি দেবে।

জানা গেছে, গত ২১ মে বিকানের রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তারা রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে এই ধরনের ব্যবস্থার পরামর্শ দেন। মন্ত্রী এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হন এবং এর পরেই এর সম্পর্কিত পাইলট রান শুরু হয়। রেলের এই ব্যবস্থা বিশেষ করে সেইসব রেল রুটে আরও কার্যকর প্রমাণিত হবে, যেখানে বেশি ভিড় থাকে এবং অপেক্ষার তালিকা দীর্ঘ হয়। এর মধ্যে রয়েছে দিল্লি, বিহার, বাংলা এবং মুম্বাইয়ের মতো ব্যস্ত রুটগুলি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, বিকানেরের সাফল্যের পর অন্যান্য স্টেশনেও ধাপে ধাপে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। এটি ভারতীয় রেলের যাত্রী পরিষেবা উন্নত করার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy