“ট্রাফিক জ্যাম আমার জীবন বাঁচিয়েছে”-বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যা বললেন ভূমি চৌহান

সময়মতো বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারেননি বলে যে হতাশা গ্রাস করেছিল ভূমি চৌহানকে, কয়েক মুহূর্ত পরই তা পরিণত হলো কৃতজ্ঞতায়। তিনি যে এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বিমানটির যাত্রী ছিলেন, সেটি আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বিধ্বস্ত হয়। ভাগ্যের এক অলৌকিক খেলায়, শহরের ভয়াবহ যানজটই হয়ে উঠল তার প্রাণরক্ষাকারী কবচ।

অঙ্কলেশ্বরের বাসিন্দা ভূমি চৌহান সড়কপথে আহমেদাবাদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা সময়মতো আহমেদাবাদ পৌঁছেছিলাম, কিন্তু শহরের তীব্র ট্র্যাফিক জ্যামের কারণে আমি পাঁচ মিনিট দেরিতে বিমানবন্দরে পৌঁছাই। তাই আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।”

সেই মুহূর্তের অনুভূতি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, “প্রথমে খুব খারাপ লাগছিল এটা ভেবে যে টিকিটের টাকা নষ্ট হলো, হয়তো চাকরিটাও হারাতে পারি। কিন্তু এখন আমি কৃতজ্ঞ… টাকা হয়তো গেছে, কিন্তু জীবন বেঁচে গিয়েছে।” পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন চৌহান। বছর দুয়েক আগে ব্রিস্টলের বাসিন্দা কেওয়াল চৌহানকে বিয়ে করেন তিনি।

বিমানবন্দরের পথে যানজটে আটকে থাকাকালীনই ভূমি অনলাইনে ফ্লাইটের জন্য ‘চেক-ইন’ করেছিলেন। তিনি জানান, “এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীরা বলেছিলেন আমি দেরি করেছি। ইমিগ্রেশন হয়ে গিয়েছিল, বোর্ডিং প্রক্রিয়াও শেষ। আমি তাদের অনুরোধ করেছিলাম। বলেছিলাম, আমি চাকরি হারাতে পারি। টিকিটের টাকাও নষ্ট হবে। কিন্তু কেউ শোনেনি।”

এরপর তিনি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসেন। ফেরার পথে একটি চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন এবং ট্র্যাভেল এজেন্টের সঙ্গে টিকিটের টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়ে কথা বলছিলেন। ঠিক তখনই আসে সেই ভয়ংকর খবর। “আমরা চা খাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলাম। সেই সময়ই ফোন আসে। জানতে পারি যে আমি যে বিমানটিতে যাওয়ার কথা ছিল, সেটি ক্র্যাশ করেছে,” তিনি বলেন।

আহমেদাবাদের ট্র্যাফিক জ্যাম তার জীবন বাঁচিয়েছে— এই বিশ্বাসে তিনি আপ্লুত। ভূমি বলেন, “আমরা সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরে গিয়ে ঈশ্বরকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আহমেদাবাদের ট্র্যাফিক জ্যামই আমার জীবন বাঁচিয়েছে।”

ভূমির এই অভিজ্ঞতা যেন প্রমাণ করে, জীবনের কোনো কোনো অপ্রত্যাশিত বাঁকই হয়ে ওঠে চরম দুর্দিন থেকে মুক্তির পথ।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy