
ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটল মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে। প্রথমে রোহিত শর্মা, আর তার ঠিক পরেই লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন বিরাট কোহলি। ক্রিকেট ভক্তরা এই দুই কিংবদন্তির হঠাৎ করে টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি। এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (BCCI)-এর সঙ্গে তাদের কী কথা হয়েছিল, তা নিয়ে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
৭ মে মুম্বইতে বোর্ডের বৈঠকের পর রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা করেন। ঠিক তার পরের দিনই আসে আরও বড় খবর – বিরাট কোহলিও লাল বলের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তবে রিপোর্ট অনুযায়ী, বিসিসিআই কর্তারা বিরাটকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছিল।
ওই দৈনিকের খবর অনুযায়ী, রোহিত শর্মাকে বোর্ড আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তিনি নেই। কিন্তু নির্বাচক মণ্ডলী ইংল্যান্ড সফরের জন্য বিরাট কোহলিকে দলে চেয়েছিল, সম্ভবত সেই কারণেই তাকে সিদ্ধান্ত বদলের অনুরোধ করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বিরাট তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। যদিও বোর্ড তারকা ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে বেশি হস্তক্ষেপ করতে চায়নি এবং এটিকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার বলেই উল্লেখ করে।
ভারতীয় ক্রিকেটের এই দুই নক্ষত্রের টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ানোয় যেন স্বস্তির হাওয়া বইছে ইংল্যান্ড শিবিরে। আসন্ন ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের আগে এই ঘটনা ভারতীয় ক্রিকেটে বড় আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার মইন আলি মনে করেন, রোহিত ও কোহলির টেস্ট ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়া ইংল্যান্ডের জন্য অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক খবর। জুন মাস থেকে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে। মইন আলি বলেন, “ইংল্যান্ডের জন্য বিরাট স্বস্তির খবর বলাই যায়। একাধিকবার এই দুই ক্রিকেটার ইংল্যান্ড সফরে এসেছেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। শেষবার ইংল্যান্ডে রোহিত দারুণ খেলেছিল।”
তবে মইন আলি একই সঙ্গে মনে করেন, ইংল্যান্ডের জন্য এটি স্বস্তির খবর হলেও ভারতের জন্য এটি বিরাট ক্ষতি। তিনি বলেছেন, “ওদের চারিত্রিক দৃঢ়তা, অভিজ্ঞতা রয়েছে। দু’জনই দলের অধিনায়কত্ব করেছে। ফলে ওদের অভাব তো অনুভূত হবেই। ইংল্যান্ডের জন্য স্বস্তি হলেও, ভারতের কাছে এটা বড় ধাক্কা।” দুই মহাতারকার টেস্ট থেকে বিদায় ভারতীয় দলের পারফরম্যান্সে কতটা প্রভাব ফেলে সেটাই এখন দেখার বিষয়।