‘টাকা মারার কোম্পানি তৃণমূল’! খিদিরপুরে আগুন প্ল্যান করে লাগানো হয়েছে, দাবি শুভেন্দুর

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হওয়া খিদিরপুর মার্কেটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিদর্শনের পরের দিনই ঘটনাস্থলে পৌঁছালেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি রাজ্য সরকারকে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন। তার দাবি, এই আগুন স্বাভাবিক ছিল না, এটি পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে – এটি একটি ‘ম্যান মেড ফায়ার’। শুভেন্দুর অভিযোগ, গরিব মানুষদের উচ্ছেদ করার ছক কষে পরিকল্পনামাফিক আগুন লাগানো হয়েছে। এছাড়াও, তিনি তৃণমূলকে ‘টাকা মারার কোম্পানি’ বলে কটাক্ষ করেছেন।

মঙ্গলবার খিদিরপুরে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে, এই ঘটনার নেপথ্যে এক গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। তার কথায়, “রাত ১টার সময় আগুন লাগে, অথচ দমকল আসে ভোর ৪টেয়।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “মুখ্যমন্ত্রী সব জানতেন, কিন্তু আগুন নেভাতে নয়, পুলিশ ও দমকলকে বলেছেন ঘর ভাঙতে।”

রাজ্য সরকারকে নিশানা করে শুভেন্দু বলেন, “আলিপুর সেন্ট্রাল জেল, চিড়িয়াখানা সব বিক্রি করে দিচ্ছে সরকার। আর যেখানে আগুন লাগছে, সেখানেই পরদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন জায়গা ঠিক হয়েছে, এক লাখ টাকা দিলাম।” কিন্তু পরে ওই জমিতে গড়ে উঠছে শপিং মল আর বিউটি পার্লার। গরিব মানুষদের তাড়িয়ে দিয়ে টাকা কামানোর বন্দোবস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ শুভেন্দুর। তার কটাক্ষ, “খিদিরপুরের জমি বেচে দিয়েছে সরকার।”

তৃণমূলকে কটাক্ষ করে শুভেন্দুর সাফ কথা, “এটা আর রাজনৈতিক দল নয়, এখন পুরোপুরি টাকা মারার কোম্পানি হয়ে গিয়েছে। কলকাতার দামি জায়গাগুলিতে আগুন লাগিয়ে জমি দখলের খেলা চলছে।”

মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে বলেন আমি বাংলার মেয়ে। কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন তাঁকে হাজার পুলিশ দিয়ে গরিব ব্যবসায়ীদের ধমকাতে হয়? তিনি আসলে ববি হাকিমদের মুখ্যমন্ত্রী, সাধারণ মানুষের নয়।” বগটুই থেকে ঢাকুরিয়া পর্যন্ত প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডকেই সরকার ব্যর্থ বলেই দাবি করেছেন শুভেন্দু।

তিনি আরও বলেন, “রাজ্যের সিস্টেম সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। প্রশাসন নীরব। জমি ও গরিব ব্যবসায়ীদের জীবিকা রক্ষার কোনও সরকারি উদ্যোগ নেই। টালিগঞ্জ-ঢাকুরিয়ার মতো জায়গাও বেচে দেওয়া হচ্ছে। চারদিকে শুধু শপিং মল, ফ্ল্যাট, আর গরিবের উচ্ছেদ।” মার্কেটের ব্যবসায়ীদের তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, “আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। জমি রক্ষার লড়াইয়ে কোনও আপস নয়। গরিব ব্যবসায়ীদের পাশে থেকে আমি যা করার সব করব।” শুভেন্দুর সঙ্গে এদিন ছিলেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং, রাকেশ সিং প্রমুখ। এই অভিযোগগুলি খিদিরপুরের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও তীব্র করেছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy