টাকা না পেয়ে ট্রাক চালককে মারের হুমকি, পোশাক খুলে দাদাগিরি! রানিগঞ্জে সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাণ্ড ভাইরাল

কয়েক দিন আগেই বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাক থেকে টাকা তুলতে গিয়ে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিপাকে পড়ার ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল। এবার সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ থেকে আরও এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বেপরোয়া আচরণের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অভিযোগ, টাকা না পেয়ে এক ট্রাক চালককে মারধরের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি নিজের পোশাক খুলে দাদাগিরি করেছেন ওই সিভিক।

বেপরোয়া সিভিকের দাদাগিরি
নিয়মিতই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের বিরুদ্ধে রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তোলা বা গাড়ি চালকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। রানিগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনায় সেই অভিযোগ আরও জোরালো হলো। জানা গেছে, রানিগঞ্জ ট্রাফিক গার্ডের অন্তর্গত ওই সিভিক ভলেন্টিয়ার ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে এক ট্রাক চালকের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন। ট্রাক চালক টাকা দিতে অস্বীকার করায়, ওই সিভিক ভলেন্টিয়ার তাঁকে মারধরের হুমকি দেন। শুধু তাই নয়, ট্রাকে উঠে চালককে মারার চেষ্টা করেন এবং নিজের পোশাক খুলেও হুমকি দিতে দেখা যায় তাঁকে।

ভিডিও ভাইরাল, তদন্ত শুরু
আক্রান্ত ট্রাক চালক গোটা ঘটনাটি তাঁর মোবাইলে রেকর্ড করেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য পুলিশকর্মীরাই ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে থামাতে চেষ্টা করছেন, কিন্তু তাঁদের সামনেই অভিযুক্ত নিজের দাদাগিরি চালিয়ে যাচ্ছেন।

অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারের নাম সোমনাথ মণ্ডল, যিনি রানিগঞ্জেরই স্থানীয় বাসিন্দা। গত সোমবারের এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে। রানিগঞ্জের ডিসিপি ট্রাফিক, ভি জি সতিশ জানিয়েছেন, আপাতত ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে।

পুলিশের বিরুদ্ধেও টাকা তোলার অভিযোগ
ভাইরাল ভিডিওতে ওই ট্রাক চালককে আরও বলতে শোনা যায় যে, তিনি কিছুটা দূরেই এক পুলিশ অফিসারের হাতে টাকা দিয়েছেন। ওই পুলিশ অফিসারই তাঁকে জানিয়েছিলেন, এরপর আর কোনও জায়গায় টাকা দিতে হবে না। ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার এই অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এর আগে বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ের ঘটনায় এক মহিলার প্রতিবাদের জেরে সিভিক ভলেন্টিয়ারকে কান ধরে ওঠবোস করতে হয়েছিল। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের পর ওই সিভিকের সঙ্গে থাকা বরানগর থানার এক এএসআই-কেও শাস্তির কোপে পড়তে হয়। রানিগঞ্জের ঘটনাটি আরও একবার সিভিক ভলেন্টিয়ারদের আচরণের উপর নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরল।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy