
জলপাইগুড়ির বিএসএফ আবাসনে এক চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলায় নাবালক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, একাদশ শ্রেণির এক নাবালিকাকে মাদক মেশানো পানীয় খাইয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্তের কয়েকজন বন্ধুকেও খুঁজছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই তাদের জেরা শুরু করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হননি পুলিশ।
ঘটনার বিস্তারিত
গত মঙ্গলবার বিকেলে পরীক্ষা শেষে ধূপগুড়ির বাসিন্দা নাবালিকা বাড়িতে জানায়, সে তার বান্ধবীর বাড়িতে থাকবে। এরপর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। বুধবার রাতে নাবালিকার পরিবারকে জানানো হয় যে সে বিএসএফ ক্যাম্পে আটক রয়েছে। এই খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
পুলিশ গভীর রাতে বিএসএফ ক্যাম্পে তল্লাশি চালালেও নাবালিকাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বুধবার সারাদিন ধরে তল্লাশি অভিযান চালানোর পর বৃহস্পতিবার সকালে ৮৪টি ফ্ল্যাট চেক করে অবশেষে নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে এই তল্লাশি চালানো হয়।
অভিযুক্তের পরিচয় ও অভিযোগ
নাবালিকাকে উদ্ধারের পাশাপাশি পুলিশ এক নাবালক যুবককে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নাবালিকা ও অভিযুক্ত পূর্বপরিচিত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, যুবক নাবালিকাকে বাইকে করে নিয়ে এসে মাদক মেশানো পানীয় খাইয়ে অচৈতন্য করে ধর্ষণ করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় অভিযুক্তের কয়েকজন বন্ধুও জড়িত থাকতে পারেন। তাদের খোঁজে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা ফোন ধরছেন না বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশের তদন্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ
পুলিশ নাবালিকাকে উদ্ধারের পর তার মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত নাবালককে গ্রেফতার করে পুলিশ হাজতে পাঠিয়েছে। এনড্রয়েড আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নাবালিকার নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই মামলায় কঠোর অবস্থান নেবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপসংহার
জলপাইগুড়ির বিএসএফ আবাসনে ঘটে যাওয়া এই ধর্ষণ মামলা এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পুলিশের দ্রুত তদন্ত ও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও, এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা এবং নাবালিকার পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়াই এখন মূল লক্ষ্য।