
আলিপুর চিড়িয়াখানার জমি রাজ্য সরকার ‘অবৈধভাবে’ বিক্রি করার চেষ্টা করছে—রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই গুরুতর অভিযোগ এবার কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়াল। বুধবার বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে এই বিষয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ ও বিজেপির প্রতিবাদ:
গত জানুয়ারি মাসেই শুভেন্দু অধিকারী এই অভিযোগ তুলেছিলেন এবং বিজেপি এই ইস্যুতে রাজপথে নেমেছিল। রবীন্দ্র সদন থেকে আলিপুর চিড়িয়াখানা পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিলও আয়োজন করা হয়েছিল। শুভেন্দু অধিকারী সেই সময় দাবি করেন যে, রাজ্য সরকার ১০০০ কোটি টাকায় চিড়িয়াখানার ৫০ কাঠা জমি বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই অভিযোগ তখন থেকেই ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল, এবং এবার তা উচ্চ আদালতে নিয়ে যাওয়া হলো।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা লঙ্ঘন? হাইকোর্টে দ্রুত শুনানির আবেদন:
মামলাকারী আদালতে অভিযোগ করেছেন যে, সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী নির্দেশিকা অমান্য করে এই জমি বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে। আদালতের কাছে জানানো হয়েছে যে, ইতিমধ্যেই এই জমির জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মামলাকারী বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছেন। ডিভিশন বেঞ্চ মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে আদালত এই অভিযোগটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
বাণিজ্যিক ব্যবহারের পরিকল্পনা, কী বলছে সূত্র?
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের বরাত দিয়ে দাবি করেছে যে, আলিপুর চিড়িয়াখানার মূল অংশের উল্টোদিকে অবস্থিত একটি অডিটোরিয়াম, অ্যাকোয়ারিয়াম, নার্সারি, পশু হাসপাতাল এবং স্টাফ কোয়ার্টার রয়েছে। এর মধ্যে স্টাফ কোয়ার্টার ও অডিটোরিয়ামের অবস্থা বেশ খারাপ। সূত্র অনুযায়ী, রাজ্য সরকার নাকি এই জমি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য হস্তান্তর করেছে। যদিও এই দাবির সত্যতা নিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি।
এই জনস্বার্থ মামলা এবং হাইকোর্টের শুনানির অনুমতি প্রদানের ঘটনা রাজ্যজুড়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন সকলের নজর আদালতের দিকে, কারণ শুনানিতে কী রায় আসে তার উপরই আলিপুর চিড়িয়াখানার ভবিষ্যৎ এবং রাজ্য সরকারের অবস্থান নির্ভর করছে।