
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি এসএসসি দুর্নীতি মামলায় চাকরি হারানোদের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বিজেপি ও সিপিএমকে তীব্রভাবে আক্রমণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চাকরিহারাদের শোকে তিনি পাথর হয়ে গিয়েছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতে তাঁর কষ্ট হচ্ছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মানুষ বিপদে পড়লে, রং দেখার দরকার নেই।” তবে একইসঙ্গে তিনি বিজেপি ও সিপিএমের যোগসাজশের অভিযোগ তোলেন। এই রায়ের পেছনে কোনও রাজনৈতিক খেলা রয়েছে কিনা, সেই আশঙ্কাও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমাকে জেলে পুরে দিলেও আমি একই কথা বলব। ২০২২ সাল থেকে একটা নোংরা খেলা শুরু হয়েছে। যাদের চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই, যারা চাকরি কেড়ে নেয়, তাদের ধিক্কার জানাই। কোনটা আসল মুখ আর কোনটা মুখোশ, তা বুঝতে হবে। যাত্রাপালার মাধ্যমে ভুল বোঝানো হয়েছে। আমি সিপিএমের চাকরি খাইনি। ৩৪ বছর ধরে ওরা অনেক অন্যায় করেছে। তোমরা গিয়ে কেন মামলা করলে?” এই প্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকেও আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা আরও বলেন, “একটা-দুটো কাজ করতে গিয়ে ভুল হতেই পারে। ভুল সংশোধনের জন্য প্রশাসনকে সময় দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেই সময় দেওয়া হয়নি।” মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাঝেই শিক্ষকদের একাংশের তরফে প্রবল বিরোধিতা আসে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তভাবে বলেন, “আমি তো সবসময় গালাগালি খাই, আমার কথা তো শুনতে হবে। যাদের পছন্দ হবে শুনবেন, থাকবেন, গ্রহণ করবেন। সকলেরই গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে।”
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দেন এবং তাঁদের আইনি লড়াইয়ে রাজ্য সরকারের সম্ভাব্য সহায়তার আশ্বাস দেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে তাঁর প্রশ্ন এবং বিরোধী দলগুলির প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাব রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ সৃষ্টি করেছে। চাকরিহারা শিক্ষকরা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে কতটা আশ্বস্ত হলেন, তা সময়ই বলবে।