
১২ জুন কালীঘাটে বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এক শিখ নিরাপত্তারক্ষীর পাগড়িতে হাওয়াই চপ্পলের কাটআউট ছোঁড়ার ঘটনায় অবশেষে ক্ষমা চাইলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. সুকান্ত মজুমদার। মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে তিনি এই ‘অনিচ্ছাকৃত ঘটনার’ জন্য শিখ সম্প্রদায়ের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গত ১২ জুন, যখন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। সেই সময় কলকাতা পুলিশ সুকান্ত মজুমদার সহ অন্যান্য বিজেপি নেতা-কর্মীদের আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলে। সুকান্ত মজুমদার তাঁর পোস্টে দাবি করেছেন, সেই উত্তেজনার মুহূর্তে পুলিশের দিকে ছোঁড়া একটি প্ল্যাকার্ড ‘দুর্ঘটনাবশত’ তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন শিখ সিআইএসএফ কর্মীর পবিত্র পাগড়ির উপর পড়ে।
এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। শিখ সম্প্রদায় এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার পাশাপাশি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি ওঠে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিধানসভায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সুকান্ত মজুমদার শিখ পুলিশের পাগড়িতে ‘চপ্পল’ ছুঁড়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন।
প্রথমদিকে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে দাবি করলেও, ক্রমবর্ধমান চাপ এবং জনরোষের মুখে পড়ে অবশেষে সুকান্ত মজুমদার ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন। তাঁর পোস্টে তিনি লিখেছেন, “এই অনিচ্ছাকৃত ঘটনায় যদি কোনও শিখ ভাই বা বোনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগে থাকে, তবে আমি বিনম্রভাবে তাঁদের কাছে আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”
এই ক্ষমা চাওয়ার ঘটনা বিজেপির জন্য একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে, বিশেষ করে যখন শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করেছিল। এখন দেখার বিষয়, সুকান্ত মজুমদারের এই ক্ষমা প্রার্থনা শিখ সম্প্রদায়ের ক্ষোভ প্রশমিত করতে কতটা সফল হয়।