
যেখানে মায়ের মৃত্যুতে সন্তানের শোকাহত হওয়ার কথা, সেখানে গহনার লোভে মাঝপথেই মায়ের শেষকৃত্য থামিয়ে দিল এক ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানে, যেখানে এক সন্তান রুপোর বালার দাবিতে মায়ের সৎকারের জন্য সাজানো চিতায় শুয়ে পড়ে এবং শেষকৃত্য হতে বাধা দেয়। এই ঘটনা হতবাক করে দিয়েছে সকলকে এবং সমাজের অবক্ষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের কোটপুতলি-বেহরোর জেলার লীলা কা বাস কি ধানি গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন বুরি দেবী। তাঁর সাত ছেলে ছিল, যাদের মধ্যে ছয় ছেলে একসঙ্গেই থাকত এবং পঞ্চম সন্তান ওমপ্রকাশ একমাত্র আলাদা থাকত। গত ৩ মে বুরি দেবীর মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুতে সব ছেলেরাই মিলেমিশে শেষকৃত্যের দায়িত্ব নেয়।
মায়ের দেহ শশ্মানে নিয়ে যাওয়ার আগেই বুরি দেবীর শরীর থেকে যাবতীয় গহনা খুলে নেয় ছেলেরা এবং তা বড় ছেলে গিরিধারীর কাছে রাখা হয়। শশ্মানে যখন সবাই মিলে চিতায় মায়ের সৎকার করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং চিতা সাজাতে ব্যস্ত ছিল, ঠিক সেই সময়ই সম্পত্তি ও মায়ের গহনা নিয়ে সাত ছেলের মধ্যে তীব্র ঝগড়া বেধে যায়।
ঝগড়ার মধ্যেই পঞ্চম সন্তান ওমপ্রকাশ মায়ের হাতে থাকা রুপোর বালা গুলি দাবি করে। বাকি ভাইরা সেই বালাগুলি দিতে আপত্তি জানাতেই বচসা চরমে ওঠে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে ওমপ্রকাশ জেদ দেখিয়ে মায়ের সৎকারের জন্য সাজানো চিতার উপরেই শুয়ে পড়ে। সে সাফ জানিয়ে দেয়, যতক্ষণ না তাঁকে রুপোর বালা দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ মায়ের শেষকৃত্য হতে দেবে না।
আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীরা অনেক চেষ্টা করেও ওমপ্রকাশকে বোঝাতে পারেননি। তার এমন আচরণে সকলেই হতবাক হয়ে যান। অবশেষে উপায় না দেখে শশ্মানে আনা হয় সেই রুপোর গহনাগুলি। ওমপ্রকাশের হাতে গহনা তুলে দেওয়ার পরই সে চিতা থেকে নামে।
May God not give such children to anyone.
Even the mother’s bier is mocked at during the cremation. Such a situation is only due to wealth.why pic.twitter.com/KoshWZoxDZ
— Mr.K§ (@KS_1407) May 15, 2025
এই ঘটনার জেরে নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পরে শেষকৃত্য হয় বুরি দেবীর। মায়ের শেষকৃত্যের মতো পবিত্র কাজকে থামিয়ে গহনার লোভে সন্তানের এমন আচরণ সমাজের অবক্ষয়কেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এবং গোটা ঘটনাটি এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।