
বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকদের ঘেরাও অভিযান ঘিরে তৈরি হওয়া উত্তপ্ত পরিস্থিতি এবার কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত পৌঁছেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের অভিযোগ, সেদিন তাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল তৃণমূল নেতা-সমর্থকরা, এমনকি পুলিশের লাঠিচার্জেরও মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। অথচ যারা হামলা করল বা হেনস্থা করল, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কোনো পদক্ষেপ নেই। উল্টো, পুলিশি সক্রিয়তা কেবল ‘যোগ্য’ আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধেই দেখা গেছে – লাঠিচার্জ করা হয়েছে, মামলাও দায়ের করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, শুধুমাত্র আন্দোলনকারীদের ক্ষেত্রেই কেন পুলিশের এই অতিসক্রিয়তা? এই প্রশ্ন তুলেই এবার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানো ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের একাংশ।
হাইকোর্টের অনুমতিতে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা
চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চে’র ডাকে বিকাশ ভবন ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অশান্তি হয়। সেই ঘটনার জেরে পরিস্থিতি এখন আদালতের চৌকাঠে।
জানা গেছে, সোমবার পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে আবেদন জানান বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভরত ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের একাংশ। আদালত সেই আর্জি মঞ্জুর করেছে। বিচারপতি জানিয়েছেন, আগামী বুধবার এই মামলার শুনানি হতে পারে।
আবেদনকারী শিক্ষকদের অভিযোগ, তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে তৃণমূল সমর্থকরা হামলা চালিয়েছিল এবং শিক্ষকদের মারধর করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ সেই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল ও সুদীপ কোনার নামের দুই শিক্ষক নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ তুলেছেন।
আবেদনকারীরা আরও জানিয়েছেন যে, আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক শিক্ষককে থানায় হাজিরার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করাসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
তাদের ওপর হামলাকারীদের ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় অথচ প্রতিবাদী চাকরিহারা শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ – আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধেই পুলিশের এই পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের একাংশ। এই মামলার শুনানিতে আদালত কী পর্যবেক্ষণ দেয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।