“খিদিরপুরে ম্যান মেড অগ্নিকাণ্ড, রাজ্যে গোটা সিস্টেম ভেঙে পড়েছে'”- আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর

খিদিরপুরের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে ঝড় তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর তিনি সরাসরি এই আগুনকে ‘ম্যান মেড’ বা মনুষ্যসৃষ্ট বলে দাবি করেছেন। একই দিনে, রাজ্যের ওবিসি সংরক্ষণ নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের কড়া পর্যবেক্ষণে রাজ্য সরকার ফের বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে, যা সরকারের উপর চাপ আরও বাড়িয়েছে।

খিদিরপুরের আগুনে ‘পরিকল্পনার গন্ধ’ দেখছেন শুভেন্দু

খিদিরপুরের বিধ্বংসী আগুন প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, “খিদিরপুরে ম্যান মেড অগ্নিকাণ্ড। পরিকল্পনামাফিক আগুন লাগানো হয়েছে।” রাজ্যের প্রশাসনকে তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, “রাজ্যে গোটা সিস্টেম ভেঙে পড়েছে।” অগ্নিকাণ্ড নেভাতে দমকলের দেরিতে পৌঁছানো এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, “রাত ১টায় আগুন লাগল, দমকল এল ভোর ৪টেয়।”

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ববি হাকিমদের মুখ্যমন্ত্রী। আগুন নেভাতে না পেরে, পুলিশ-দমকলকে ঘর ভাঙতে বলছেন।” তাঁর অভিযোগের তীর আরও তীক্ষ্ণ করে তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস মানে টাকা মারার কোম্পানি। মুখ্যমন্ত্রীর ওপর থেকে মানুষের আস্থা উঠে গেছে। কলকাতায় র‍্যাকেট চলছে, ভাল জায়গায় আগুন লাগিয়ে বেচে দাও। উনি গরিব মানুষের মুখ্যমন্ত্রী নন, ববি-সুজিত-কালিম গ্রুপের মুখ্যমন্ত্রী।” এই ঘটনা তিনি বিধানসভায় তুলবেন বলেও জানিয়েছেন।

ওবিসি মামলায় রাজ্যকে হাইকোর্টের ‘ধাক্কা’

অন্যদিকে, একই দিনে ওবিসি সংরক্ষণ মামলায় রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টে ফের ধাক্কা খেয়েছে। ১৪০টি জনজাতিকে ওবিসি তালিকাভুক্ত করার রাজ্যের নতুন বিজ্ঞপ্তিতে ডিভিশন বেঞ্চ অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের একাধিক বিজ্ঞপ্তিতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

বিচারপতি মান্থা মন্তব্য করেন, “বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যের ৪-৫টি বিজ্ঞপ্তিতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। রাজ্যের বিজ্ঞপ্তিতে সরাসরি অমান্য করা হয়েছে আদালতের নির্দেশ।” তিনি ২০১২ সালের আইন অনুযায়ী কাজ না করে ১৯৯৩ সালের আইনে ফিরে যাওয়ার কারণ নিয়েও রাজ্যকে প্রশ্ন করেন। বিচারপতি চক্রবর্তীও স্মরণ করিয়ে দেন যে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষা না করা পর্যন্ত ৬৬টি সম্প্রদায়ের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ না করার কথা আদালত আগেই জানিয়েছিল।

খিদিরপুরের অগ্নিকাণ্ড এবং ওবিসি মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ – এই দুটি ঘটনাই রাজ্য সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। শুভেন্দু অধিকারীর ‘ম্যান মেড’ অগ্নিকাণ্ডের তত্ত্ব এবং ওবিসি সংক্রান্ত হাইকোর্টের কড়া রায়, দুইয়ে মিলেই রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy