
শিশুদের খেলার বয়স, অথচ তাদের কাঁধে ইটের বোঝা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পোলেরহাটে দুটি ইটভাটায় হানা দিয়ে উদ্ধার করা হলো ২১ শিশু-সহ মোট ৩৬ জন শ্রমিককে। বৃহস্পতিবার জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ (ডিএলএসএ) এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে এই উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন হয়।
শ্রমিকদের দুর্দশা
উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের বেশিরভাগই বিহার ও ওডিশার বাসিন্দা। পাঁচ থেকে ১৫ বছরের শিশুরাও বড়দের সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করছিল। শ্রমিকরা জানান, ভোর ৩টে থেকে কাজ করতে বাধ্য করা হতো এবং মাসের পর মাস মজুরি দেওয়া হতো না।
অভিযানের বিবরণ
ডিএলএসএ-র কর্মীরা জানান, প্রথম ইটভাটায় ২০ জন শিশু-সহ ৩০ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। দ্বিতীয় ইটভাটা থেকে উদ্ধার করা হয় ছয় জন শ্রমিককে, যার মধ্যে একজন শিশু। অভিযোগ, শ্রমিকদের কৃতদাসের মতো খাটানো হচ্ছিল। শ্রম দপ্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
স্থানীয়দের বাধা
উদ্ধারের সময় স্থানীয় কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখান, যারা আদতে ইটভাটা মালিকদের লোক বলে অভিযোগ। পুলিশ শ্রমিকদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। পরে আদালতের নির্দেশে শিশুদের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির তত্ত্বাবধানে হোমে পাঠানো হয়।
উপযুক্ত ব্যবস্থা ও পুনর্বাসনের দাবি
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শ্রমিকদের ঋণের ফাঁদে ফেলে কৃতদাসের মতো খাটানো হচ্ছিল কি না, তা তদন্ত করা হোক। এছাড়া, ‘সেন্ট্রাল সেক্টর স্কিম ফর রিহ্যাবিলিটেশন অফ বন্ডেড লেবার-২০১৬’ অনুযায়ী শ্রমিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করারও দাবি জানানো হয়েছে।
‘শিশু শ্রম আইন- ১৯৮৬’ অনুযায়ী ইটভাটা মালিক ও অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদনও করা হয়েছে।