
ইসরায়েলের সম্ভাব্য আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সামরিক হামলা চালাতে পারে এমন জল্পনা-কল্পনার মধ্যে বুধবার হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অবস্থান স্পষ্ট করলেন না, বরং হামলার সম্ভাবনা জিইয়ে রাখলেন। তার মন্তব্যে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করলো।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল সরাসরি – “ইরানে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালাবে কি না?” জবাবে ট্রাম্পের কৌশলী উত্তর ছিল, “আমি এটি বলতে পারব না… আপনি ভাববেন না আমি এ প্রশ্নের উত্তর দেব।” তিনি আরও যোগ করেন, “আপনি জানেন না আমি এটি (হামলা) করবই কি না। আপনি জানেন না। আমি হামলা করতে পারি। আমি হামলা নাও করতে পারি। আমি বোঝাচ্ছি, কেউ জানে না আমি কী করতে যাচ্ছি।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প একদিকে যেমন ইরানের ওপর সামরিক চাপের কৌশল বজায় রাখলেন, তেমনি অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলে তার ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করলেন।
তার মন্তব্যে ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনার একটি প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতও ছিল। ট্রাম্প বলেন, “আমি আপনাকে বলতে পারি— ইরান অনেক সমস্যায় আছে এবং তারা আলোচনা করতে চায়। আমি তাদের বলেছি, তাহলে কেন আগে আলোচনা করেননি। আমি বলেছি, কেন দুই সপ্তাহ আগে আলোচনা করেননি। আগে আলোচনা করলে আপনারা ভালো করতেন। আপনাদের দেশ থাকত।” এই বক্তব্যে ট্রাম্প বোঝাতে চেয়েছেন যে, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব, তবে ইরান সময়মতো সেই সুযোগ কাজে লাগায়নি। তার এই মন্তব্য ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং নেতৃত্বের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি বেশ কয়েকবার ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে। একদিকে যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ছে, তখন ট্রাম্পের ‘অনিশ্চিত’ নীতি পরিস্থিতিকে আরও বেশি অপ্রত্যাশিত করে তুলছে বলে মনে করছেন অনেকে। বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে ট্রাম্প প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।