
ভোটের ফল প্রকাশের দিন তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া বোমার আঘাতে ৯ বছরের বালিকা তামান্না খাতুনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। পুলিশ ঘটনাটিকে ‘দুর্ঘটনা’ আখ্যা দিলেও, বিজেপির পক্ষ থেকে বিষয়টিকে নিছকই দুর্ঘটনা মানতে নারাজ। বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন, এটি ‘দুর্ঘটনা নয়, টার্গেট করেই বোমা মারা হয়েছে’, এবং এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
পুলিশের ‘দুর্ঘটনা’ তত্ত্ব
কালীগঞ্জের এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে একটি দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনা হিসেবেই তুলে ধরেছে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, বিজয় মিছিলের সময় অনভিপ্রেতভাবে এই ঘটনা ঘটেছে এবং এর পেছনে কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছিল না। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছে।
বিজেপির বিস্ফোরক পাল্টা দাবি
তবে পুলিশের এই ‘দুর্ঘটনা’ তত্ত্বে বিন্দুমাত্র আস্থা নেই বিজেপির। দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই ঘটনাকে তীব্র ভাষায় নিন্দা করেছেন এবং এটিকে পূর্বপরিকল্পিত হামলা হিসেবে অভিহিত করেছেন। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, “কালীগঞ্জে দুর্ঘটনা নয়, টার্গেট করেই বোমা মারা হয়েছে।” তাঁর অভিযোগের তীর সরাসরি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে।
শমীক ভট্টাচার্য আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেন যে, মৃত বালিকা তামান্নার পরিবার তৃণমূল সমর্থক ছিল না, আর সে কারণেই এমন নৃশংস কাণ্ড ঘটিয়েছে তৃণমূল। তাঁর এই মন্তব্য ঘটনার মোড়কে সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দিয়েছে এবং এর পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তত্ত্বকে সামনে এনেছে।
রাজনৈতিক চাপানউতোর
তামান্নার মৃত্যু ঘিরে শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল তাদের রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর আক্রমণের জন্য বোমা ব্যবহার করছে এবং নিরীহ শিশুর জীবন কেড়ে নিয়েছে। অন্যদিকে, তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বিজেপির দিকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে।
এই ঘটনা কেবল একটি মর্মান্তিক মৃত্যুই নয়, বরং ভোটের পরবর্তী হিংসা এবং রাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতির উপর এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। পুলিশের তদন্তে কী উঠে আসে এবং এই ঘটনার প্রকৃত কারণ কী, তা জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে গোটা রাজ্য।