
দেশের সীমান্তে যখন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জোরদার হচ্ছে, ঠিক তখনই উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা থানার মছলন্দপুর এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করার সময় গ্রেফতার হলেন দুই বাংলাদেশি মহিলা অনুপ্রবেশকারী। ধৃতদের নাম সেলিনা বিবি এবং নাজমা বিবি। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা দু’জনেই বাংলাদেশের যশোর জেলার বাসিন্দা এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে মছলন্দপুর এলাকায় ওই দুই মহিলাকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। তাঁদের আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেই পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তাঁরা স্বীকার করেন যে, কাঁটাতার টপকে চোরাপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছেন এবং তাঁদের কাছে কোনো বৈধ পরিচয়পত্র নেই। এরপরেই গোবরডাঙা থানার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। শুক্রবারই ধৃতদের বারাসাত আদালতে তোলা হয়েছে।
এই গ্রেফতারি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তুঙ্গে। পহেলগাঁওতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার জেরে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও একের পর এক উদ্বেগজনক খবর উঠে আসছে। প্রতিবেশী দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে জেল থেকে একাধিক অপরাধী-সন্ত্রাসবাদীর মুক্তি, ভারতের জন্য নতুন করে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই জঙ্গিরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে পারে। আর ঠিক এই পরিস্থিতিতে এই দুই বাংলাদেশি মহিলার গ্রেফতারি প্রশাসনের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই ঘটনার পেছনে আরও বড় কোনো ষড়যন্ত্র লুকিয়ে থাকতে পারে। কারণ, এভাবে বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে অনুপ্রবেশের ঘটনা বারবার ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রেই অনুপ্রবেশকারীদের উদ্দেশ্য শুধু বসবাস নয়, থাকতে পারে ভিন্ন উদ্দেশ্যও। ভারতের নিরাপত্তার জন্য এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় বলেই মনে করছে গোয়েন্দা মহল। সেই কারণে ধৃত প্রত্যেক অনুপ্রবেশকারীর উদ্দেশ্য, যোগাযোগ এবং অতীত খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে এবং এই ধরনের অনুপ্রবেশকারীদের গতিবিধি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এই দুই মহিলার গ্রেফতারি কি কোনো বড় চক্রের অংশ? তা জানতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে গোবরডাঙা থানার পুলিশ।