কলকাতার দুই স্কুলে বমাতঙ্ক, ইমেল হুমকি পুলিশের তৎপর তল্লাশি, আতঙ্কবিহীন পড়ুয়ারা

বুধবার সকালে এক ইমেল বার্তায় বোমাতঙ্ক ছড়াল কলকাতার দুটি নামী স্কুলে। আনন্দপুর ও শিয়ালদা সংলগ্ন এলাকার এই দুই স্কুলে পাঠানো ইমেলে স্পষ্ট লেখা ছিল, দুপুর ২টোর মধ্যে স্কুল উড়িয়ে দেওয়া হবে। বার্তাটি চোখে পড়তেই দ্রুত পুলিশকে খবর দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ, যার পর পরই শুরু হয় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান। শেষ পর্যন্ত কিছু না মেলায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকরা।

হুমকি বার্তা ও পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ
সকাল ১১টা নাগাদ ক্যালকাটা বয়েজ স্কুল এবং ক্যালকাটা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে এই হুমকি ইমেলগুলি আসে বলে জানা গেছে। ইমেল প্রাপ্তির পরপরই আনন্দপুর ও তালতলা থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বোম স্কোয়াড টিম এবং প্রশিক্ষিত পুলিশ কুকুর নিয়ে শুরু হয় তন্নতন্ন তল্লাশি। স্কুলের প্রতিটি কোণায় সম্ভাব্য বিপদ খুঁজে বের করতে দীর্ঘ সময় ধরে চলে এই অভিযান।

পড়ুয়াদের সুরক্ষায় কর্তৃপক্ষের তৎপরতা
ক্যালকাটা বয়েজ স্কুলের এক শিক্ষিকা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইমেলটি দেখে প্রথমে তাঁরা চমকে গিয়েছিলেন। তবে আতঙ্ক যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হয়। “আমরা সমস্ত বাচ্চাদের একটি নির্দিষ্ট ঘরে একত্রিত করে রাখি, যাতে তারা এই ঘটনার বিষয়ে কিছু টের না পায়। সেই সময় বোম স্কোয়াডের দল পুরো স্কুলজুড়ে তল্লাশি চালায়। তল্লাশি শেষ হওয়ার পর যখন তারা বেরিয়ে যায়, তখন আবার বাচ্চাদের লাইন করে ক্লাসে ফিরিয়ে আনা হয়। দীর্ঘ তল্লাশির পরও পুলিশ কিছু খুঁজে পায়নি।” শিক্ষিকার এই মন্তব্যে বোঝা যায়, দক্ষতার সাথে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে এবং পড়ুয়াদের মধ্যে কোনও আতঙ্ক ছড়াতে দেওয়া হয়নি।

রহস্যময় ইমেলের পুনরাবৃত্তি
কলকাতার স্কুলে বোমাতঙ্ক ছড়ানোর ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত এপ্রিল মাসেও শহরের একটি নামকরা স্কুলে একই ধরনের ইমেল আসে, যেখানে ‘স্কুলে বোমা রাখা রয়েছে’ বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সময় পয়লা বৈশাখের ছুটি থাকায় পরিস্থিতি ততটা গুরুতর হয়নি। এই ইমেলগুলির উৎস নিয়ে পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কে বা কারা এই ধরনের হুমকি বার্তা পাঠাচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়।

এবারের ঘটনার পর পুলিশ আরও সতর্ক হয়েছে। হুমকি ইমেলগুলির উৎস খুঁজে বের করতে এবং এর নেপথ্যে কারা রয়েছে, তা জানতে জোরদার তদন্ত চালাচ্ছে তারা। শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন পুলিশের মূল লক্ষ্য।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy