
প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লিখিত পরীক্ষা আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা চাকরিপ্রার্থীদের প্রস্তুতির জন্য মাস তিনেক সময় দেবে। এবার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে প্রকাশিত নতুন নিয়মাাবলীতে স্পষ্ট করা হয়েছে।
লিখিত পরীক্ষা ও নম্বরের বিন্যাস:
এবার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় থাকছে ৬০ নম্বর। এটি ২০১৬ সালের পরীক্ষার তুলনায় ৫ নম্বর বেশি। শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য বরাদ্দ নম্বর অনেকটাই কমানো হয়েছে, এবার এর জন্য রাখা হয়েছে মাত্র ১০ নম্বর।
অভিজ্ঞ শিক্ষকদের জন্য সুবিধা:
স্কুল শিক্ষা দফতর সরাসরি চাকরিহারাদের কথা উল্লেখ না করলেও, বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছে। প্রতি বছর শিক্ষকতার জন্য ২ নম্বর করে, মোট ১০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। এই সুবিধা স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক উভয় ধরনের শিক্ষকরাই পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
লেকচার ডেমোস্ট্রেশন ও মৌখিক পরীক্ষা:
লিখিত পরীক্ষা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার নম্বরের পাশাপাশি, লেকচার ডেমোস্ট্রেশন অর্থাৎ পড়িয়ে দেখানোর জন্য ১০ নম্বর রাখা হয়েছে। এছাড়া, মৌখিক পরীক্ষার জন্য থাকছে আরও ১০ নম্বর।
২০১৬ সালের পরীক্ষার সঙ্গে এবারের পার্থক্যের তুলনা:
লিখিত পরীক্ষা: ২০১৬ সালে লিখিত পরীক্ষা হয়েছিল ৫৫ নম্বরের, যা এবার বাড়িয়ে ৬০ নম্বর করা হয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ২০১৬ সালে শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য ৩৫ নম্বর বরাদ্দ ছিল, যা এবার কমিয়ে ১০ নম্বর করা হয়েছে।
শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা: এবার নতুন করে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর যুক্ত করা হয়েছে, যা ২০১৬ সালের নিয়মে ছিল না।
পার্সোনালিটি টেস্ট/মৌখিক পরীক্ষা: ২০১৬ সালে পার্সোনালিটি টেস্টের জন্য ১০ নম্বর বরাদ্দ ছিল। এবার মৌখিক পরীক্ষার জন্য ১০ নম্বর এবং লেকচার ডেমোস্ট্রেশনের জন্য ১০ নম্বর রাখা হয়েছে।
প্যানেলের মেয়াদ: ২০১৬ সালের মতো এবারও প্যানেলের মেয়াদ ১ বছর রাখা হয়েছে। তবে রাজ্য সরকারের অনুমতিক্রমে তা বাড়ানো যেতে পারে।
কাউন্সেলিং: ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয়ভাবে কাউন্সেলিং হয়েছিল। এবার কাউন্সেলিং হবে রিজিয়নভিত্তিক।
OMR সংরক্ষণ: ২০১৬ সালে OMR শিট ১ বছর সংরক্ষণ করে রাখার নিয়ম ছিল। এবারের পরীক্ষার OMR-এর হার্ডকপি ২ বছর এবং স্ক্যানড ইমেজ ১০ বছর সংরক্ষণ করা হবে।
নতুন এই নিয়মাবলী একদিকে যেমন যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দেবে, তেমনি অভিজ্ঞ শিক্ষকদেরও স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই বিজ্ঞপ্তি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং আধুনিকীকরণ আনতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন অনেকে। চাকরিপ্রার্থীরা এখন থেকেই সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সম্ভাব্য লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।