
ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিধানসভায় ব্যাখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, রাজ্য সরকার যে ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ করেছিল, হাইকোর্ট তা বাতিল করে ৭ শতাংশ করেছে। এই বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন এবং সুপ্রিম কোর্টেও মামলা চলছে, যার ফলে ভর্তি বা চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান যে, রাজ্য সরকার দ্রুততার সঙ্গে বেঞ্চমার্ক সার্ভে চালিয়ে পিছিয়ে পড়া অংশকে চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে অভিযোগ করেন যে, এই ইস্যুর সঙ্গে জাত বা ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই এবং কিছু রাজনৈতিক দল এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তিনি স্পষ্ট করেন যে, রাজ্য সরকার শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া অংশকে চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যেই কাজ করছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পরপরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলার অনুমতি চেয়ে উঠে দাঁড়ান। কিন্তু অধ্যক্ষ তাকে বলার অনুমতি দেননি এবং এর পরেই প্রথমার্ধের অধিবেশন শেষ হয়ে যায়। অধ্যক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিজেপির বিধায়করা বিধানসভার ভেতরে এবং পরে বাইরে এসেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, “মুসলিম তোষণের সরকার চলছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিভাবে বিধানসভায় বিবৃতি দিতে পারেন। বিরোধীদের কেন বলতে দেওয়া হলো না, এই প্রশ্ন তুলেও বিজেপি বিক্ষোভ করে।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দেয়। হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে প্রায় ১২ লক্ষ সার্টিফিকেট অকেজো হয়ে যায়। উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার এবং অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর উভয়ই সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে। এই আইনি লড়াইয়ের পরিণতি কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।