“এভাবে কি ইতিহাস মোছা যায়!”- বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাড়ি ভাঙার পিছনে কার কলকাঠি?

বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান—৩২, ধানমন্ডি। এটি শুধু একটি ঠিকানা নয়, একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতীক। এই বাড়িটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি, যেখানে থেকে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। তবে আজ এই বাড়ি আর নেই। পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং তাঁর পরিবারকে হত্যার ঘটনার স্থান আজ মুছে দেওয়া হল।

গোটা দেশের কাছে এটি একটি ঐতিহাসিক স্থান হলেও, এর ভেঙে দেওয়া নিয়ে চলছে তীব্র বিতর্ক। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ ইউনূস-কে বেইমান বলে আক্রমণ করেছেন। অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে, এই বাড়ি ভাঙা কি পূর্বপরিকল্পিত ছিল?

বুধবার, আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগ তাদের পেজ থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্য রাখার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তার আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিশেষ করে ফেসবুক এবং এক্স (পূর্ববর্তী টুইটার)-এ কিছু পোস্ট নজরে আসে। এই পোস্টগুলোতে হাসিনাকে রুখতে ৩২ ধানমন্ডি-কেই নিশানা বানানোর ডাক দেওয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ হাসনাত আবদুল্লা ফেসবুকে পোস্ট করেন, “বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থমুক্তি মুক্ত হবে।” এদিকে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি-ও ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দেন। বিভিন্ন পোস্টে বলা হয়, “ফ্যাসিবাদের আঁতুড়ঘর ৩২ ধানমন্ডি আর থাকবে না।” কোথাও সরাসরি লেখা হয়, “৩২ ধানমন্ডিকে আজ ধ্বংস করা হবে।”

এই পোস্টগুলি দেখেই প্রশ্ন উঠেছে, কি তবে জনগণের ক্ষোভ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল, নাকি এই ভাঙন পূর্বপরিকল্পিত ছিল?

বঙ্গবন্ধুর কন্যা এবং বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনাকে ঘিরে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী এই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। তারা বাড়ি লুঠ করেছিল, কিন্তু ভাঙেনি, আগুন লাগায়নি। আজকের ঘটনাটি, ইউনূস জমানায় সেটাই করা হল।”

এখনও পর্যন্ত, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং তার প্রধান মহম্মদ ইউনূস-এর পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে এ ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা, যা একটি ঐতিহাসিক স্থানকে চিরতরে মুছে ফেলার জন্য করা হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy