এখনো দেননি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা, আড়ালে থেকে যা করছেন নেতানিয়াহু

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েল গতকাল যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হয়। যা হামাসের একাধিক কর্মকর্তা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কাতারের আমির মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানি এবং নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এখনো যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেননি। উল্টো হামাসের ওপর দোষ চাপিয়ে এটির অনুমোদন আটকে রেখেছেন তিনি। তবে ইসরায়েলের এক কর্মকর্তাই বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) জানিয়েছেন, নেতানিয়াহু তার জোট সরকার বাঁচাতে এমনটি করছেন।

নেতানিয়াহুর ডানপন্থি জোট সরকারের দুই উগ্রপন্থি মন্ত্রী ইতামার বিন গিভির এবং বাজায়েল স্মোরিচ জানিয়েছেন, যদি হামাসের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন তিনি দেন এবং আবারও যুদ্ধ শুরু না করেন তাহলে জোট থেকে বেরিয়ে সরকার ভেঙে দেবেন। কিন্তু চুক্তি হলেও তারা দুজন যেন জোট না ছাড়েন সেটির প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু।

এই কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলকে বলেছেন, চুক্তিটির বিস্তারিত ধারাগুলো চূড়ান্ত করা হচ্ছে। কিন্তু যেসব বিষয় নিয়ে এখনো মতানৈক্য রয়েছে সেগুলো খুবই ছোট। যা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শেষ করা যাবে। নেতানিয়াহু এ মুহূর্তে কী করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এ কর্মকর্তা বলেন, তিনি ‘জোট রাজনীতি’ করছেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তরের নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, নেতানিয়াহু চুক্তি নিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন সেগুলো সম্পর্কে তারা অবগত। তবে তার বিশ্বাস এসব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে এবং আগামী রোববার থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হবে।

এদিকে কাতারের আমিরের যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৮০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এরমধ্যে শুধুমাত্র গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন।

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা অ্যারাবিকের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, গাজা সিটির ইঞ্জিনিয়ার্স ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ের কাছের একটি ভবনে ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ওই হামলায় নিহত হন ১৮ ফিলিস্তিনি। অপরদিকে ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, গাজা সিটির রেদওয়ান এলাকা থেকে ১২ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে তারা।
এছাড়া মধ্য গাজার বুরুজি ক্যাম্পের কারাজ এলাকায় ড্রোন হামলায় নিহত হন আরও পাঁচজন। নিহতরা সেখানে জড়ো হয়েছিলেন।
গতকাল হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা শোনার পর গাজার সাধারণ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। তারা আনন্দ উল্লাস করতে থাকেন। তবে কিছুক্ষণ পরই ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় বাসিন্দারা আবারও নিজ নিজ তাঁবুতে ফিরে যান।

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy