
মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া থানার অধীনস্থ আব্দুলপুর এলাকায় এক বেদনাদায়ক ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে বৌমার কাছে গুড় চাওয়ার ‘অপরাধে’ এক বৃদ্ধা মাকে শারীরিক নিগ্রহ ও দুই দিন ধরে ঘরে বন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার নিজেরই একমাত্র ছেলের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ছেলের নাম তোহিদুল মণ্ডল।
গুড়ের আবদার, মায়ের উপর নৃশংস আক্রমণ
আক্রান্ত মা, প্রবীণা অরুণা বেওয়া অভিযোগ করেছেন, “গত রবিবার বৌমার কাছে একটু গুড় চেয়েছিলাম খাওয়ার ইচ্ছায়। কিন্তু আমার ছেলে তোহিদুল মণ্ডল হঠাৎ প্রচণ্ড রেগে গিয়ে চোখে, মুখে ও নাকে কিল, চড়, ঘুষি মারতে থাকে। এই মারধরের ফলে মুখে গভীর কালশিটে পড়ে যায় এবং চোখে ঝাপসা দেখছি।”
ঘরবন্দি রেখে অত্যাচার, অবশেষে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয়
শারীরিক নিগ্রহেই থামেনি ছেলের অত্যাচার। অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনার পর থেকে অরুণা বেওয়াকে টানা দুই দিন ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। কোনোমতে মঙ্গলবার তিনি ওই ঘর থেকে পালিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে বুধবার হরিহরপাড়া তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি অফিসে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। তবে সেখানেও কোনো সুরাহা না মেলায়, শেষমেশ তিনি সকালে হরিহরপাড়া থানায় গিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জমি লিখে নেওয়ার পর থেকেই অত্যাচার বৃদ্ধি, অভিযোগ মায়ের
অভিযোগকারী অরুণা বেওয়া আরও জানান, “গত পৌষ মাসে আমার একমাত্র ছেলে জোর করে আমার সমস্ত জমি-জায়গা নিজের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নেয়। তারপর থেকেই তুচ্ছ তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারধর শুরু করে। কিন্তু এবার সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেছে।”
এই ঘটনায় হরিহরপাড়া থানায় তোহিদুল মণ্ডলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রাসঙ্গিক ধারায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এই ঘটনা সমাজে বয়স্কদের প্রতি নির্যাতনের এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরল।