উত্তর দিতে নন ইচ্ছুক, মৌনব্রত পালনের কৌশল হুমায়ুনের! পুলিশের জেরায় নতুন মোড়

বাবা-মা খুনের অভিযোগের পর এবার ‘মৌনব্রত’ পালন শুরু করেছে অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীর। পুলিশের জেরায় পছন্দের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে ইংরেজিতে লেখা চিরকুটে, আর ব্যক্তিগত প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ সে। এই নতুন কৌশল তদন্তকারী অফিসারদের একাংশকে চিন্তায় ফেলেছে।

মেমারি থানার পুলিশ সাত দিনের জন্য হুমায়ুনকে হেফাজতে নিয়েছিল। কিন্তু পাঁচ দিনের মাথাতেই তাকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। সেখানেও সে মৌন থেকেছে এবং চিরকুটে লিখে উত্তর দিয়েছে। জানা গেছে, মেমারি থানায় পুলিশের জেরার মুখেও হুমায়ুন একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। লিখিতভাবে সে পুলিশকে জানিয়েছে, বাষট্টি দিন মৌন থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তাই সব কিছু লিখিতভাবে জানাবে।

সোমবার বর্ধমান আদালতে বিচারকের কাছে জবানবন্দি দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে হুমায়ুন। আদালত তাকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে এবং আগামী ২৩ জুন তাকে ফের আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে।

গত সোমবার মধ্যরাতে পুলিশ হুমায়ুনকে নিয়ে বাবা-মা খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রিকনস্ট্রাকশনের সময় বাড়িতে গিয়েও হুমায়ুন ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। বাবা-মাকে খুন করার জন্য তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুতাপ দেখা যায়নি। তার বক্তব্য, “বাবা-মা দোষ করেছিল। তাই তাদের খুন করেছি।” পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, বাবা-মা যে শাস্তি পেয়েছে, তা সবাইকে দেখাতেই সে তাদের মৃতদেহ ঘর থেকে রাস্তায় নিয়ে গিয়েছিল।

খুনে একটি ছুরি ছাড়াও সূচালো একটি অস্ত্র ব্যবহার করেছিল হুমায়ুন। ওই ছুরি নিয়েই সে বনগাঁ চলে গিয়েছিল এবং সেখানকার একটি এতিমখানায় সেই ছুরি দিয়ে বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা চালায়। পরে বনগাঁ থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং ছুরিটি বাজেয়াপ্ত করে। এখন মেমারি থানার পুলিশ ছুরি ছাড়াও ব্যবহৃত অন্য সূচালো অস্ত্রটির খোঁজ চাইছে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের একাংশের মতে, মৌনব্রতের কৌশল নিয়ে সে পুলিশের জেরা এড়াতে চাইছে।

থানার লকআপে থাকাকালীন হুমায়ুন বিভিন্ন বই, খাতা, পেন এবং খবরের কাগজ চেয়ে পুলিশ কর্মীদের নাজেহাল করে ছেড়েছে বলে জানা গেছে। তার ওপর নজরদারির জন্য মোট বারো জন পুলিশ কর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছিল।

Related Posts

© 2025 News - WordPress Theme by WPEnjoy