উত্তর কোরিয়ার সেনারা রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে, দাবি দক্ষিণ কোরিয়ার

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হায়ুন দাবি করেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পাশে থেকে তাদের হয়ে লড়াই করছে উত্তর কোরিয়ার সেনারাও। মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও সুনির্দিষ্ট করে বলেছেন, গত ৩ অক্টোবর দোনেস্কের কাছাকাছি একটি অঞ্চলে ইউক্রেনের মিসাইলের আঘাতে খুব সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার অন্তত ছয়জন সেনা ও কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনের গণমাধ্যমগুলোতে এ ধরনের খবরও প্রকাশিত হয়েছে ইতিপূর্বে।

মঙ্গলবার আল-জাজিরা জানিয়েছে, পিয়ংইয়ং এবং মস্কোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের নতুন ঘোষণা আসার মধ্যেই ইউক্রেনের উত্তর কোরিয়ার সেনা উপস্থিতি নিয়ে গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেছেন, ‘বিভিন্ন পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা মনে করি ইউক্রেনে উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তা ও সৈন্যদের হতাহতের ঘটনাটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।’

ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করার জন্য উত্তর কোরিয়া আরও সৈন্য পাঠাবে বলেও ধারণা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম ইয়ং-হায়ুন উল্লেখ করেছেন—রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি সামরিক জোটের মতো পারস্পরিক চুক্তির কারণে একে অপরের প্রয়োজনে নিয়মিত সৈন্য মোতায়েনের বিষয়টি অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত জুনে একটি ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারত্ব গ্রহণ করেছেন। ওই অংশীদারত্বের মধ্যে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিও ছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট দক্ষিণ কোরিয়া দাবি করেছে, পিয়ংইয়ং রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনে ব্যবহৃত অস্ত্রের প্রধান সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে। তবে দুই দেশই এই ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, উত্তর কোরিয়ার কামান এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন বেড়ে যাওয়া এবং এগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা রাশিয়ায় আরও অস্ত্র চালানের প্রস্তুতি হতে পারে। একদিকে দেশটির অস্ত্র পরীক্ষা এবং অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার বড় আকারে সামরিক মহড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়াকে শত্রু রাষ্ট্র ঘোষণা করে ১৯৯১ সালে স্বাক্ষরিত একটি আন্ত-কোরিয়ান চুক্তি বাতিল করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠার পর থেকে মস্কো এবং পিয়ংইয়ং মিত্র ছিল। মস্কো ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে দুই দেশের ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়েছে।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy